বন্দরে পড়ে থাকা সর্বনাশা ৪৩ পণ্যের লট নিলামে যাচ্ছে

বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম— এমন বিপজ্জনক পণ্যের ৪৩টি লট সহ মোট ৪৯টি লট নিয়ে বিশেষ নিলামের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এ নিলাম। এ বিশেষ নিলামটি সচরাচর অনুষ্ঠিত হওয়া নিলাম থেকে একেবারেই আলাদা। শুধুমাত্র বন্দরের পি-শেডে থাকা রাসায়নিক বা বিপজ্জনক পণ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ বিশেষ নিলাম। এর বাইরে কয়েকটি লটে থাকবে পচনশীল কাঁচা পণ্য।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, নিলাম আয়োজন করা ৪৯টি লটের ৪৩টিকেই রয়েছে বিভিন্ন বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্য। অন্যদিকে পচনশীল ফলমূল রয়েছে ছয়টি লটে। ৪৩টি রাসায়নিক পণ্যের মধ্যে বেশিরভাগ পণ্যই ড্রামে রাখা। যা রাখা আছে বন্দরের পি শেডে। যে অবস্থায় ও যেভাবে আছে সেভাবেই নিলাম হবে। এ নিলামের উদ্দেশ্য হল পি- শেড খালি করা।

সুত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে গত ২০ বছর ধরে জমা হওয়া বিপজ্জনক পণ্য চিহ্নিত করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। বন্দরের ‘পি শেডে’ খালাস না নেওয়া এসব পণ্য মজুদ করা রয়েছে। বিপজ্জনক এসব পণ্যের তালিকায় এমন কিছু পণ্য আছে, যা সেই ২০০০ সাল থেকেই শেডে পড়ে আছে। যদি এসব পণ্য বিস্ফোরিত হয়, তাহলে লেবাননের বৈরুতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে রসায়নবিদরা আশঙ্কা করছেন।

বন্দরের নিলাম তালিকা ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০০০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২০ বছর ধরে বন্দরে পড়ে থাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিপজ্জনক কঠিন পদার্থ, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, ব্লাঙ্ককিট, ডাইথোনাইট এবং সালফক্সিলেট, হাইড্রোক্লোরাইড, নাইট্রো গ্লু সলিউশন, কস্টিক সোডা, ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান, বেভারেজ কনসেন্ট্রেট এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন রাসায়নিক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, লেবাননের বৈরুতে বিস্ফোরণ হওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরেও কী পরিমাণ বিপজ্জনক পণ্য রয়েছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য গত ৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি বন্দরের পি-শেডে ২৩ ধরনের পণ্যের মজুদ খুঁজে পায়।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার ( নিলাম) ফরিদ আল মামুন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিপজ্জনক পণ্য নিয়ে বিশেষ নিলামের আয়োজন করেছে কাস্টমস হাউস। পচনশীল বিবেচনায় ৬ লটে কিছু ফলমূল রাখা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে সব ধরনের পণ্য নিয়ে বড় আকারে নিলাম অনুষ্ঠিত হয় সবসময়। কিন্তু এবারেরটা তেমন নয়। তাই এটির নাম বিশেষ নিলাম দেওয়া হয়েছে।’

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!