চারটি ওয়াটার পাম্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি জমা করে বিক্রি করছিল একটি চক্র। এতে এলাকাবাসী পানি না পেয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। প্রতিকার না পেয়ে নগরের বন্দর থানায়ও অভিযোগ দেওয়া হয়। তবে থানা পুলিশও ব্যর্থ এ চক্রের কাছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে এলাকারবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার রিমন সাখাওয়াত নগরের বন্দর থানার পশ্চিম নিমতলা আব্দুল লতিফ সড়কের দোতলা মসজিদ এলাকার হাজী ইউসুফ সওদাগরের বাড়িতে যান। গত দুই বছর ধরে সেখানে পাম্প বসিয়ে ওয়াসার পানি জমা করে তা বিক্রি করে আসছিল একদল দুর্বৃত্ত। সাংবাদিক রিমন সেখানে গিয়ে ওয়াসার পানি ৪ থেকে ৫টি ভ্যানগাড়ির ড্রামে পূর্ণ করার সময় ভিডিও ধারণ করেন।
এরপর তার সঙ্গে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক ঘটনা। ঘটনাস্থলে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে ওয়াসার অবৈধ পানির ব্যবসায়ী ইউসুফ সওদাগরের ছেলে ইকবাল হোসেন এসে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। পরে প্রতিবেদকের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিওগুলো ডিলিট করে দেন। এরপর ফোন করে আরও লোকজন ডেকে আনেন। ঘটনার একপর্যায়ে ইকবালের সহযোগী আব্দুল অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে সাংবাদিক রিমন সাখাওয়াত গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন।
এরপর ওই এলাকার কিশোরগ্যাংয়ের কিছু সদস্য এসে সাংবাদিক রিমনকে হুমকিধমকি দিতে থাকে। তারা নিজেদেরকে স্থানীয় সাংসদ এমএ লতিফের ‘আত্মীয়’ বলেও পরিচয় দেন।
পরে প্রতিবেদক তাদেরকে বুঝিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক হোসাইন তৌফিক ইফতিখারের সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দিয়ে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রেহাই পান।
এ ঘটনায় নগরের বন্দর থানায় মামলা করতে গেলে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। বার বার মামলা নেওয়ার কথা জানালেও তিনি তা করেননি।
সিইউজের উদ্বেগ
এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের প্রতিবেদক রিমন সাখাওয়াতের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সোমবার (২২ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই ঘটনায় সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি ফুটে ওঠেছে। যা সাংবাদিকতা পেশা ও কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য বড় ধরনের হুমকি। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সাংবাদিকের উপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।