সিডিএ-ওয়াসার কারণেই অক্সিজেন মোড়ে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

বৃষ্টি হওয়ার তিন দিন অতিবাহিত হলেও চট্টগ্রামের হাটহাজারী সড়কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অক্সিজেন মোড়ে রয়ে গেছে হাঁটুপানি। এ পানির কারণে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়, হাটহাজারী ও রাউজানগামী মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। এছাড়া রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির বাস কাউন্টার অক্সিজেন মোড়ে হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভুগছেন পার্বত্য জেলার বাসিন্দারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অক্সিজেন মোড় থেকে আলপনা কমিউনিটি সেন্টার পর্যন্ত হাটুঁ পরিমাণ পানি। এ পানির মধ্যে হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করছে। হাঁটুপানির কারণে গাড়ির গতি কমে যাওয়ায় ওই এলাকায় তীব্র যানজট লেগেই আছে। যে পাঁচ ফুটের নালার কারণে পানি জমে গেছে সে নালাটি আলপনা কমিউনিটি সেন্টার ও জেলাপরিষদ মার্কেটের সামনে অক্সিজেন মোড় হয়ে কালারপুল ব্রিজের পাশের খালে সংযুক্ত হয়েছে।

স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ নালাটি ওয়াসা ও সিডিএর উন্নয়নে পানির পাইপ লাইন বসানোর সময় সিমেন্টের বস্তা ফেলে পানি আসার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। উন্নয়ন কাজ শেষ হওয়ার পর সে বস্তাগুলো আর সরানো হয়নি। এছাড়া বাস টার্মিনাল ও ফলের দোকানের কার্টন ও বিভিন্ন ধরণের চিপস,পলিথিন, আবর্জনার কারণে নালাটি বন্ধ হয়ে গেছে।
মক্কা হোটেলের সামনে নালার কিছু অংশ ভেঙ্গে জলাবদ্ধতা কমানোর কাজ করছিল নাজিম ও বিধান নামের দুই শ্রমিক। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা শনিবার (২৫ মে) থেকে পানি সেচের কাজ করছে। দেখা যায়, নালার একটি অংশ ভেঙ্গে যেখানে সেচের পানি ফেলছে সেখানে অক্সিজেন সড়কের নিচের নালাটিতে মাটি, ইট, বালি পলিথিনসহ ময়লায় ভরাট হয়ে আছে।

সোমবার (২৭ মে) রাত আটটায় এই মোড়ে কয়েকটি বাস ও সিএনজি ছাড়া কোন গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়নি। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় হাটুঁ পরিমাণ পানি জমে থাকায় অধিকাংশ গাড়ি পার্কিং করতে পারছে না। এছাড়া গাড়িতে যাত্রী সংখ্যাও কমে গেছে। ঐ মোড়ে ৬০টি দোকান থাকলেও অধিকাংশ দোকান বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও সেগুলোতে নেই কোন ক্রেতা।

ফল ব্যবসায়ী সানাউল্লাহ বলেন, বৃহস্পতিবার (২৩ মে) তিনলাখ টাকার ফল বিক্রির জন্য এনেছি। তিনদিন ধরে অক্সিজেন মোড়ে জমে থাকা পানির জন্য এ ফলগুলো বিক্রি করতে পারছি না।

মোড়ে ট্রফিকের দায়িত্বপালন করা রিপন বড়ুয়া নামের একজন বলেন, প্রতিদিন আমরা মোড়ে চার জন কাজ করি। জলাবদ্ধতার কারণে ১০ জন কাজ করেও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না।
সিডিএ-ওয়াসার কারণেই অক্সিজেন মোড়ে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ 1

জালালাবাদ ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত কাউন্সিলর মোবারক হোসেন জানান, অক্সিজেনে মোড়ে সিডিএর রাস্তার কাজ করার সময় স্লেভটি ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াসার পানির পাইপলাইনের কাজ করার সময়ও নালাটি কিছুটা ভরাট হয়ে যায়। আমরা আপদকালীন হিসেবে পাম্প দিয়ে পানি সেচের চেষ্টা করছি। আমি মেয়রের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। তিনি এখানে একটি বক্স কালভার্ট করে দেবেন বলে আমাকে জানান।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, জলাবদ্ধতার কাজ সিডিএ করেন। আমরা করি না। সিডিএ ও ওয়াসার কারণে এখানে জলাবদ্ধতা। আপনি আমাকে কেন ফোন দিয়েছেন বুঝতেছি না। আমরা কোন এলাকায় নালায় প্রতিবন্ধকতা হলে কাজ করি।
এখানে নালায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে বললে ‍তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাকে জানিয়েছি। আমাদের স্থানীয় কাউন্সিলর জলাবদ্ধতা নিরসণে কাজ করছেন।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!