বিভিন্ন দেশে আটকেপড়া ২০০ জন বিদেশফেরত বুধবার (২২ এপ্রিল) রাঙামাটিতে ফিরছেন। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখতে জেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের শুক্কুরছড়িতে অবস্থিত রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্ধারণ করেছেন জেলা প্রশাসন। এমন খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই গ্রাম ছাড়তে শুরু করছেন।
কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ‘এসব লোকদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে’।
তবে জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, ‘সরকারের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে এটা রাখা হয়েছে। চেষ্টা করছি, তাদেরকে চট্টগ্রামে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রেখে পরীক্ষা শেষেই রাঙামাটিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে’।
স্থানীয়রা জানান, বিদেশফেরত লোকজনকে রাখার খবর শুনে ‘কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট’ এলাকার শুক্কুরছড়ি, বোধিপুর, নারাইছড়ি, মধ্যমপাড়া ও খামারপাড়ার লোকজন করোনা আতঙ্কে উৎকণ্ঠা রয়েছেন। তারা বলছেন, রাঙামাটিতে করোনা ভাইসার ছিল না, হয়তো বিদেশফেরত লোকজনের মাধ্যমে এ রোগ ছড়াতে পারে। প্রতিবাদ জানাতে গ্রামবাসীকে সংগঠিত করতে এরইমধ্যে গ্রামে গ্রামে করেছেন সভাও।
মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) বোধিপুর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য চন্দ্রলাল চাকমা বলেন, ‘রাঙামাটি শহরে অনেক স্কুল-কলেজ খালী পড়ে আছে, সেখানে না রেখে আমাদের এলাকায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন সবাই ভয়ে আছি’।
নারী কার্বারী (গ্রাম প্রধান) সুকঞ্জিত চাকমা বলেন, ‘গ্রামের মানুষ তেমন সচেতন নয়। তাদের কাজ না করলে ভাত জুটে না। মাঠে এসেছে পাকা ধান, ধান কাটতে লোকজন মাঠে যাবে। যদি কিছু হয়ে যায় তার দায়ভার কে নেবে?’ আমাদের গ্রামে এত বড় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন করা হলে আমরা ঝুঁকিতে পড়ব’।
গ্রামবাসীদের অনেকেই ঝুঁকি এড়াতে ছাড়তে শুরু করছেন গ্রাম। এমন তথ্য জানিয়েছেন সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৃণাল কান্তি চাকমা।
তিনি বলেন, ‘কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়বে এই আতংকে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে অনেক লোকজন। অন্যদের মধ্যেও ভীতি দেখা দিয়েছে।’
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধভাবে থাকা প্রায় ২০০ জন প্রবাসীকে ২২ এপ্রিল বিশেষ বিমানে ফেরত আনা হচ্ছে। এদের বেশিরভাগই রাঙামাটিসহ পার্বত্য এলাকার। তাদেরকে চট্টগ্রামে কোয়ারেন্টিনে রাখতে সেখানকার প্রশাসনের সাথে কথাবার্তা চলছে। আমারা রাঙামাটিবাসী করোনা মুক্ত থাকতে চাই’।
এএইচ