চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে জালিয়াতি/ সেই ওয়াটারওয়েজের বিরুদ্ধে মামলা, ৬ কর্মকর্তাকে শোকজ

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো পণ্য খালাসে জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়াটারওয়েজের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ কর্তৃপক্ষ। কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বাদি হয়ে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন। ফৌজদারি আইনে দায়ের হওয়া ওই মামলায় ওয়াটারওয়েজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামছুদ্দিন এবং কাস্টম সরকার মো. ফারুককে আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে এই এজাহার দায়ের করা হয়।

এছাড়া ওই ঘটনায় দায়িত্বহীনতা, কর্ম অদক্ষতা ও অসতর্কতার কারণে রাজস্ব কর্মকর্তা মশিউর রহমান, ফজলুর রহমান, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ইমরান হোসেন, নুরুল মোস্তফা, করুণাময় চাকমা এবং রেডিও অপারেটর স্বপন মজুমদারকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার নাহিদ নওশাদ মুকুল বলেন, কাস্টম হাউজের পক্ষে মামলার বাদি করা হয়েছে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুনকে। জালিয়াতির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কাস্টমসের ৬ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানের নোটিশ প্রদানের বিষয়ে দায়িত্বকালীন কোনো কর্মকর্তা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে তদন্ত প্রতিবেদনে যে ছয়জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে সে অনুযায়ী ওই ছয় কর্মকর্তাকে বৃহস্পতিবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত পৌনে এগারটায় বন্দর থানার ওসি (তদন্ত) ফজলে আজিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কাস্টম হাউজ থেকে একটি এজাহার দেওয়া হয়েছে। রাতে মামলা হিসেবে এন্ট্রি হতে পারে।

প্রসঙ্গত চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সফটওয়্যারকে বোকা বানিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে কার্গো পণ্য খালাস করার অভিযোগ উঠে সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়াটারওয়েজের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে বিষয়টি সরকারের উর্ধ্বতন মহলের নজরে আসলে তদন্ত শুরু করে কাস্টমস হাউজ। ওই তদন্তে বিমানবন্দরের কার্গো হল থেকে পণ্য ছাড় করার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়াটারওয়েজ শিপিংলাইনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপরিশ করা হয়।

ঘটনার অধিকতর তদন্তের লক্ষ্যে ১২ জুন গঠিত হয় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি। ওই তদন্ত কমিটিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার-২ কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনকে আহ্বায়ক, অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার আমিনুল ইসলামকে সদস্য সচিব এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা প্রসাদ কুমার মন্ডলকে সদস্য করা হয়।

তদন্ত কমিটি গত ৪ জুলাই ২৪২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার ফখরুল আলমের কাছে। তদন্তকারী দল সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়াটারওয়েজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শামছুদ্দিন এবং ওই প্রতিষ্ঠানের কাস্টম সরকার মো. ফারুকের বিরুদ্ধে জালিয়াতিতে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। শাস্তি হিসেবে ওই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল এবং ফৌজদারি আইনে মামলার সুপারিশ করা হয়। এরপর ওয়াটারওয়েজের লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এসসি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!