পটিয়ার ১৯ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে তৃতীয় ধাপের চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার (৫ মে) চট্টগ্রাম জেলা আঞ্চলিক নির্বাচন ভবনে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে যাচাই-বাচাই শেষে দুপুরে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

নির্বাচনের কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, ৬ষ্ঠ উপজেলার তৃতীয় ধাপের পটিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মোট ১৯টি মনোনয়নপত্র পেয়েছি। সবগুলো বাছাই করেছি। এতে ১৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করছি। সবগুলো মনোনয়নপত্র বৈধ পেয়েছি। কোনো মনোনয়নপত্রের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসেনি। সুতরাং সব প্রার্থীকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করছি।

পটিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন সহ মোট ১৯ প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম যাচাই বাছাইয়ে বৈধতা পেয়েছে।

এদিকে তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২ মে।মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই ছিল রোববার ৫ মে, ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে, আপিল নিস্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে স্বচ্ছ ব্যালটের মাধ্যমে।

অপরদিকে চেয়ারম্যান পদে বৈধ হওয়া ৫ জন প্রার্থীরা হলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাশ, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম, উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক সৈয়দ নুরুল আবসার।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে বৈধ মনোনয়ন প্রাপ্তরা হলেন যুবলীগ নেতা আবু সালেহ মুহাম্মদ শাহরিয়ার শাহরু, আওয়ামী লীগ নেতা আশীষ তালুকদার, ডা. এমদাদুল হাসান, আওয়ামী লীগ নেতা ঝুলন দত্ত, মোজাম্মেল হোসেন রাজধন, জেলা যুবলীগ নেতা সাইফুল হাসান টিটু, জেলা সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ বেলাল।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বৈধ প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম শিরু, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজেদা বেগম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা বেগম জলি, কানিজ ফাতেমা শাওন, নুর আয়েশা বেগম, সুমি দে।

নতুন নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণক জমা দিতে হয়েছে। উল্লেখ করতে হয়েছে টিআইএন নম্বরও। আগের বিধিমালায় নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগের কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হতো। এক্ষেত্রে প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশের কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হতো। সংশোধিত বিধিমালা এটি সংশোধন করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশের কম পেলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

সংশোধিত বিধিমালায় নির্বাচনি ব্যয়েও পরিবর্তন এসেছে। আগের আইনে ১ লাখ ভোটারের জন্য প্রার্থী ব্যক্তিগত ও নির্বাচনি ব্যয় করতে পারেন সাড়ে ৫ লাখ টাকা, ১ লাখ এক থেকে ২ লাখ ভোটারের জন্য ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ২ লাখের বেশি ভোটার সম্বলিত উপজেলার জন্য ১১ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন।

নতুন উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় চেয়ারম্যান বা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচনি ব্যয় বাবদ অনধিক ২৫ লাখ টাকা এবং ‘মহিলা সদস্যথ পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচনি ব্যয় বাবদ অনধিক ১ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন।

আগে ভোটগ্রহণের তিন সপ্তাহ আগে থেকে প্রার্থীরা প্রচারণায় অংশ নিতে পারতেন। এবার তা সংশোধন করে প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকে প্রচারণা শুরুর কথা বলা হয়েছে। প্রচার-প্রচারণার আওতায় এবার ডিজিটাল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও সন্নিবেশ করা হয়েছে।

এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিধানও শিথিল করেছে ইসি। এতদিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে ২৫০ ভোটারের সমর্থনসূচক সই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হতো। এটি এখন একেবারেই তুলে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভোটারদের সমর্থনসূচক সই লাগবে না।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীরা সাদাকালোর পাশাপাশি রঙিন পোস্টার ও ব্যানার করতে পারবেন। এছাড়া নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও পুনরায় ভোটের নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে ইসির ক্ষমতা স্পষ্ট করা হয়েছে।

এবারের উপজেলা নির্বাচনে ১২৮টি কেন্দ্রে পটিয়ার ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৩৮ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৬ জন।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!