পূর্ব ষোলশহরে রোহিঙ্গাদের জাল সনদে স্বাক্ষর দেন কাউন্সিলর

যাচাই বাছাই না করেই অধিকাংশ জাল সনদে স্বাক্ষর করেন চট্টগ্রামের পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। নির্বাচন কমিশন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এ স্বাক্ষর দেখিয়েই ৬০-৭০ হাজার টাকায় রোহিঙ্গারা পেয়ে যায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। শুধু তাই নয়, ওই ওয়ার্ডের দুই কর্মকর্তার যোগসাজশে সনদ নেওয়ার সুযোগ পায় রোহিঙ্গারা— এমনটাই জানালেন দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়-২ এর এক কর্মকর্তা।

রোহিঙ্গাদের সনদ পাইয়ে দেওয়ার এই অপকর্মে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে অভিযুক্তরা হলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশরাফুল আলম, সেখানে সিটি করপোরেশনের নিযুক্ত ওয়ার্ড জন্ম নিবন্ধন সহকারী বনশ্রী সেন গুপ্তা এবং ওই ওয়ার্ডের সচিব।

দুদকের তদন্তে এনআইডি পাওয়া যেসব রোহিঙ্গার নাম জানা গেছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মেখল পাড়ার সামসুল আলমের পুত্র ওমর ফারুক। ফারুক বর্তমানে চান্দগাঁও থানার বাদশা চেয়ারম্যান ঘাটার আব্দুল জলিল বাড়ির বাসিন্দা হয়ে বসবাস করছেন। বাঁশখালী উপজেলার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কালীপুর এলাকার বাসিন্দা ছালামত উল্লাহর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম। বর্তমানে তিনি চান্দগাঁও থানার ৬ নম্বর ওয়ার্ড খরম পাড়ার বাসিন্দা। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ছোট বারদোনা শাহ মুনসুরিয়া পাড়ার বাসিন্দা আবু সামার পুত্র মোহাম্মদ জুনায়েত ও বর্তমানে তিনি চান্দগাঁও থানার ওমর আলী মাতবর রোড এলাকার বাসিন্দা।

দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে এনআইডি জালিয়াতির ঘটনার তদন্ত চলছে। সাম্প্রতিক অভিযুক্ত কয়েক কাউন্সিলরকে দুদক থেকে চিঠি ইস্যু করে তলবও করা হয়। এ তদন্ত চলমান রয়েছে। এনআইডি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলাসহ তাদের সম্পদেরও হিসাব নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত হয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে অনেকে অর্থের বিনিময়ে পেয়ে যায় দেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। এই এনআইডি দিয়ে আবার অনেকে পাসপোর্টও তৈরি করে। এদের মধ্যে বড় অংশ বিদেশেও চলে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর একটি টিম তদন্ত শুরু করে। এতে প্রাথমিক তদন্তে জালিয়াতির প্রমাণ পেয়ে অধিকতর তদন্তের অনুমতি চেয়ে কমিশন বরাবরে এই ঘটনার প্রতিবেদন জমা দেয় দুদক। ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গাদের এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের অনুমতি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন।

মুআ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!