হালদা নদীতে ‘নমুনা ডিম’ ছেড়েছে মা মাছ

চট্টগ্রামে বজ্রপাত ও ভারি বৃষ্টির পরপরই হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ। মঙ্গলবার সকালে নদীর রাউজান ও হাটহাজারী অংশের বিভিন্ন পয়েন্টে নমুনা ডিম পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারীরা।

নমুনা ডিম ছাড়ার পর পুরোদমে ডিম ছাড়ার অপেক্ষায় রয়েছে হালদার ডিম সংগ্রহকারীরা। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এবার রেকর্ড পরিমাণে ডিম সংগ্রহের আশা করছেন তারা।

হালদা নদীর প্রজনন মৌসুম বছরের এপ্রিল, মে ও জুন মাস। এ সময় ডিম ছাড়ার আগে নমুনা ডিম ছাড়ে কার্প জাতীয় মা মাছ। নমুনা ডিম দেখে নদী পাড়ের ডিম সংগ্রহকারীরা পুরোদমে ডিম সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। দীর্ঘদিন তাপদাহে পুড়লেও গতকাল সোমবার দুপুর থেকে বজ্রপাতসহ কালবৈশাখী শুরু হয় চট্টগ্রামে।

এতে মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে রাউজানের চইল্যাখালী এলাকায় ডিম সংগ্রহকারীর ২ থেকে আড়াই বালতি ডিম সংগ্রহ করেছেন। ডিম সংগ্রহকারী পাখিরাম দাশ, হরি রঞ্জন দাশ, সন্তোষ দাশ, সুনীল দাশ, সুজিদ দাশসহ কয়েকজন জানান, ১১টি নৌকায় তারা ২ থেকে আড়াই বালতি ডিম সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া হাটহাজারী এলাকায় নোয়াহাট, মাছুয়াগোনা, মদুনাঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় অল্প পরিমাণ নমুনা ডিম পাওয়া গেছে।

নমুনা ডিম ছাড়ার পর নদী তীরের ডিম সংগ্রহকারীরা নিজেদের নৌকা নিয়ে নদীতে পর্যবেক্ষণ করছেন। নদীতে প্রতি নৌকায় দুয়েকজন নিয়ে তারা পরিস্থিতি দেখছেন। ডিম ছাড়লে সবাই সংগ্রহে নামবেন।

রাউজানের পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা, পশ্চিম গহিরা বড়ুয়াপাড়া, দক্ষিণ গহিরা, গহিরা মোবারক খীল, গহিরা জামতল, পশ্চিম বিনাজুরী, কাগতিয়া, আজিমের ঘাট, মগদাই, নাপিতের ঘাট, পশ্চিম আবুর খীল, খলিফার ঘোনা, উরকিরচর, সার্কদা মোকামীপাড়া কচুখাইন, হাটহাজারীর গড়দুয়ারা, নয়া হাট, আমতোয়া, বাড়িঘোনা, মাছুয়া ঘোনা, পোরালীর মুখ, দক্ষিণ মাদারসা এলাকার নদীতীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী ডিম সংগ্রহকারীরা প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন শ’ নৌকা নিয়ে অপেক্ষা করছেন।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডিম ফুটানোর জন্য রাউজানের পশ্চিম গহিরা, কাগতিয়া, গহিরা মোবারক খীল, হাটহাজারীর মদুনাঘাট, মাছুয়াঘোনা ও মাদার্শা এলাকায় ৭টি হ্যাচারি নির্মাণ করা হয়।

এর মধ্যে হাটহাজারীতে ৪টি ও রাউজানের গহিরা মোবারক খীল, রাউজানের পশ্চিম বিনাজুরী আইডিএফ’র একটি হ্যাচারি সচল রয়েছে। পশ্চিম গহিরা ও কাগতিয়ার দুটি হ্যাচারি অকোজো হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন।

হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ মাসে দুটি জো রয়েছে। গতকালের কালবৈশাখীতে মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। রাউজান অংশে অনেকে ২ থেকে আড়াই বালতি ও হাটহাজারী অংশে কিছু পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করেছেন। এখন ডিম ছাড়ার জন্য পরিবেশ অনুকূলে রয়েছে। বৃষ্টি হলে মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে।

সিএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!