জলাবদ্ধতায় অচল চট্টগ্রাম, অভিশাপ থেকে মুক্তি নেই চট্টগ্রামবাসীর

টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পুরো চট্টগ্রামজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর নিম্নাঞ্চলে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে আছে। পুরো বন্দরনগরীই যেন পানিবন্দি হয়ে অচল হয়ে আছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। প্রয়োজনের তুলনায় যানবাহনও কম সড়কে।

ভারী বৃষ্টিপাতে বন্দর নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা, বহদ্দারহাট মোড়, মুরাদপুর মোড়, শোলক বহর এলাকা, দুই নাম্বার গেইট এলাকা, অক্সিজেন মোড়, বাদশা মিয়া পেট্রোল পাম্প, জিইসি মোড় থেকে খুলশী,শিল্পকলা এলাকায় মোহাম্মদ আলী রোড, ওয়ারলেস গেইট মুরগি ফার্ম, প্রবর্তক মোড়, চকবাজার গুলজার মোড় ,বাদুরতলা জঙ্গিশাহ মাজার মোড়, ডিসি রোড, ওয়াসা মোড়, নিউ মার্কেট থেকে আমতল, নিউ মার্কেট থেকে বিআরটিসি মোড়, জামাল খান মোড়, চৌমুহনী থেকে কদমতলী মোড়, আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় থেকে এক্সেস রোড, সদরঘাট মোড়,সল্টগোলা ক্রসিং, ইপিজেড থেকে বন্দরটিলা, মনসুরাবাদ পুলিশ লাইন এলাকায় পানি জমে আছে।

এছাড়া নগরীর অধিকাংশ সড়কে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ না হওয়ায় সৃষ্ট গর্তে জমে আছে বৃষ্টির পানি। এতে রিকশা, সিএনজি ট্যাক্সিসহ যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে।

চট্টগ্রামের অভিশাপ জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল নগরীর রেডিসন ব্লুতে সেনাবাহিনীর সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ওই মাসেই বহুল প্রত্যাশিত এ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়।
চট্টগ্রাম নগরবাসীকে রক্ষায় গৃহীত এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ৩৬ খালের মাটি অপসারণসহ ৩০০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এর দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কোর। তারা খালের দুপাশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, রাস্তা নির্মাণ ও নিচু ব্রিজগুলো ভেঙে উঁচু করার কাজ শুরু করে। এছাড়া নতুন করে ১০০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ২০২০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরে ৩৬টি খাল, খালের পাশে ১৭৬ কিলোমিটার প্রতিরোধক দেয়াল, ৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ৪২টি বালির ফাঁদসহ (সিল্ট ট্র্যাপ) নানা অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা জানায় ওই সময়।

কিন্তু এ পর্যন্ত সেনাবাহিনী যা কাজ করেছে তা হলো গত বছর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২৪টি ওয়ার্ডের ৪৭টি ড্রেন থেকে ১ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ২৪ সিএফটি বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। চলতি বছর ১৪টি ওয়ার্ডে বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে ৪১ লাখ ৮ হাজার ৬০৫ সিএফটি।

চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ ৫৫টি খালের মধ্য দিয়ে জোয়ারের পানি চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করে। যতক্ষণ পর্যন্ত এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না ততক্ষণ চট্টগ্রাম শহর জলাবদ্ধতামুক্ত হবে না বলেও জানান সেনাবাহিনীর প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!