চুয়েটের ছাত্রী হলে আসন বরাদ্দে বৈষম্যের নালিশ

উদ্বোধন হতে না হতেই চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) নবনির্মিত শামসেন নাহার খান হলে আসন বরাদ্দ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা।

আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন। বৈষম্যের প্রতিবাদে রোববার (২৬ জানুয়ারি) একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনও করেছেন।

ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকে দুই বছর গণরুমে ডাবলিং করে থেকেও আসন বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পায়নি। চট্টগ্রাম শহরের কোনো মেয়েকে রুম দেওয়া হয়নি। প্রতি ৪ জনের রুমের মধ্যে একজনও চট্টগ্রাম শহরের স্থানীয় থাকলে পুরো রুমের সবার অ্যাপ্লিকেশন বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় বর্ষের (১৬ ব্যাচ) ৬১ জন মেয়ে গণরুমে থাকলেও তাদের মধ্যে মাত্র ২০ জন নতুন হলে আসন বরাদ্দ পেয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনেককে সিজিপিএর ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যাদের সিজিপিএ বেশি তারা সিট পেয়েছে, আর যাদের সিজিপিএ তুলনামূলক কম তারা বৈষম্যের শিকার হয়েছে।

এর আগে শামসেন নাহার খান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আরেফিন স্বাক্ষরিত এক আসন বরাদ্দ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সিনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থীরা রুম বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে। কিন্তু বাস্তব পুরোটাই উল্টো।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৪ ব্যাচের ৮ জন, ১৫ ব্যাচের ১২ জন, ১৬ ব্যাচের ৬০ জন, ১৭ ব্যাচের ৭৬ জন, ১৮ ব্যাচের ৬০ জন অর্থাৎ চলমান শিক্ষার্থীদের মোট ২১৬ জন আসন পায়। হিসেব মতে, ৫০০ আসনের আবাসিক হলের ২১৬ জন চলমান শিক্ষার্থী পক্ষান্তরে নতুন ব্যাচের (১৯ ব্যাচ) ২৮৪ জন শিক্ষার্থীকে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ শামসুল আরেফিন বলেন, ‘হলটি ৫০০ আসনের বলতে— কমন রুম, টিভি রুম মিলিয়ে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বরাদ্দের জন্য এতগুলো আসন নেই। আছে ৪২০ বা ৪৩২ এর আশে পাশে। এক্ষেত্রে রুম পাওয়ার ক্ষেত্রে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা প্রাধান্য পাবে।’

এ ব্যাপারে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক বলেন, ‘ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা সমাধান করতে আমরা সব সময়ই আন্তরিক। কিন্তু এখানে আসলে একটা ভুল বোঝাবোঝির সৃষ্টি হয়েছে। টেন্ডার সমস্যার কারণে সবগুলি খাট এসে এখনো পৌঁছায় নি। প্রথম পর্যায়ে ২০০ খাট এসে পৌঁছানোর কারণে আমরা সব ছাত্রীদের আসন বরাদ্দ দিতে পারিনি। বাকিদেরকে আমরা খুব শীঘ্রই আসন বরাদ্দ করে দেবো।’

চট্টগ্রামের স্থানীয় শিক্ষার্থীর আসন পায় না— এমন অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমাদের আবাসন সমস্যা নিয়ে সীমাবদ্ধতা আছে, তাই একদম আদিকাল থেকেই দূরত্ব এবং সিজিপিএর ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ দিয়ে থাকি। যেহেতু চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের বাসা থেকে ক্লাস করার একটা সুবিধা আছে তাই তাদের প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা আসন বরাদ্দ না করতে পারলেও এক বছর পর তাদের আসন বরাদ্দ দিই।’

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে হুমায়রা জান্নাত মিম বলেন, ‘শামসেন নাহার খান হলের প্রাধ্যক্ষ শামসুল আরেফিন স্যার আসন বরাদ্দ নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। স্যারের সঙ্গে কথা বলে আমাদের পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!