চট্টগ্রামে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

স্বামীর দাবি আত্মহনন, মেয়ের পরিবার বলছে হত্যা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় নাইমা সুলতানা নিশি নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে স্বামী আত্মহত্যা দাবি করলেও গৃহবধূর বাবার দাবি, যৌতুকের জন্য হত্যা।

বুধবার (২২ নভেম্বর) বুধবার বিকালে উপজেলার ঢেমশা ইউনিয়নের নাপিতের চর এলাকার নবী মিস্ত্রির বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত নিশি (১৯) ওই গ্রামের মোরশেদ আলমের স্ত্রী এবং গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার সবুজ মিয়ার মেয়ে।

অপরদিকে মোরশেদ আলম সাতকানিয়া উপজেলার ঢেমশা ইউনিয়নের নাপিতের চর এলাকার জালাল আহমদের ছেলে। তিনি পেশায় অটোরিকশা চালক।

জানা গেছে, পারিবারিক কলহের কারণে নিশি তার ব্যবহৃত ওড়না কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে নিহতের বাবা সবুজ মিয়া জানান, কয়েক বছর আগে থেকে তারা গাজীপুর থেকে এসে সাতকানিয়া কেওচিয়া ইউনিয়নের ব্যবসায়ী পাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। গত ৩ মাস আগে মেয়ের বিয়ে হয়। মেয়ের জামাই অটোরিকশা চালক। বিয়ের কিছুদিন পার হতেই জামাতা আমার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। এনিয়ে নিশিকে শারীরিক অত্যাচার শুরু করলে মেয়ে আমার বাসায় চলে আসে। এক পর্যায়ে মেয়ের সুখ চিন্তা করে জামাইয়ের হাতে ৪০ হাজার টাকা তুলে দিই। আমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিল।

তিনি বলেন, বুধবার ২টায় শুনতে পাই, নিশি শ্বশুর বাড়ির শোয়ার ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে গিয়ে দেখি, নিশির মৃতদেহ পড়ে আছে। আমার ধারণা, শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আকতার কামাল জানান, কি কারণে মেয়েটি মারা গেছে, তার সঠিক কারণ বলতে পারব না। তবে মহিলার শাশুড়ির মুখ থেকে শুনেছি, গত ২-৩ মাস আগে ছেলে ও মেয়েটি পরিবারের অগোচরে বিয়ে করেছিলেন। গত ১৫ দিন যাবৎ তারা ছেলের বাপের বাড়িতে সংসার করছিলেন।

তিনি আরও জানান, মেয়েটি যদি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে থাকে, তাহলে আমরা কেউ গলায় কোনো দাগ বা চিহ্ন দেখতে পেলাম না কেন?

সাতকানিয়া থানা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আতাউল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিকালে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলেই গৃহবধূর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। রিপোর্ট আসলেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এখন থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!