এসএসসি পাস ভিপি সুমনের ‘গরু’ থেকে আয় কোটি টাকা!

চট্টগ্রাম নগরের ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন কাউন্সিলর হওয়ার আগে ‘ভিপি সুমন’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ৫ বছর আগে তিনি যখন প্রথমবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন, তখন তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল ‘স্বশিক্ষিত’। দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২০ সালে তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, তাতে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতার কলামে লিখেছেন এসএসসি। চট্টগ্রাম নগরীর ব্যারিস্টার সুলতান কলেজের ভিপি পদ ব্যবহারকারী সুমনের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিস্মিত তার এলাকার ভোটাররা।

ভিপি সুমনের সম্পদও বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। কৃষি খাত থেকে ৫ বছর আগে তার কোন আয় না থাকলেও গত ৫ বছরে তিনি এই খাত থেকে আয় করেন ১ কোটি ৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে গরু থেকে আয় ১ কোটি টাকা, মাছ চাষ থেকে আয় ৬ লাখ টাকা।

অকৃষি জমিও বৃদ্ধি হয়েছে দ্বিগুণের বেশি। ৫ বছর আগে ৫টি দাগে তার অকৃষি জমি ছিল ১ কোটি ২২ লাখ ২১ হাজার ৪৫০ টাকা মূল্যের। বর্তমানে ৮টি দাগে ২ কোটি ২১ লাখ ১ হাজার ৬৫০ টাকার জমি আছে তার নামে। স্ত্রীর নামে আগে কোন জমি না থাকলেও বর্তমানে ৪০ লাখ ৪৩ হাজার ৬০৩ টাকা মূল্যের ১০ শতক অকৃষি জমি আছে।

আবাসিক দালান আগে না থাকলেও নতুন হলফনামায় ৭ তলা দালান দেখিয়েছেন তিনি। যার মূল্য ঘোষণা করা হয়েছে ২ কোটি ৩৬ লাখ ৪২ হাজার টাকা।

১ লাখ টাকা মূল্যের মৎস্য খামার ও ২০ লাখ টাকা মূল্যের গরুর খামারে ব্যবসায়িক মূলধন উল্লেখ করেছেন ২৯ হাজার ৩৩৯ টাকা। একই কলামে স্ত্রীর নামে মূলধন আছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা।

বাড়ি, এপার্টমেন্ট বা দোকান থেকে আগে তার কোন আয় না থাকলেও নতুনভাবে বার্ষিক ৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা আয় করছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার।

তার প্রদর্শিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কেজিএন এন্টারপ্রাইজের ব্যপ্তি বাড়ার সাথে যুক্ত হয়েছে কেজিএন ডেইরি ফার্ম ও মৎস্য প্রকল্প নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ব্যবসা থেকে আগের হলফনামায় আয় ৭ লাখ ৬২ হাজার ৮৩৩ টাকা দেখানো হলেও নতুন হলফনামায় আয় কমে হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা। অন্যান্য আয় আগে ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা থাকলেও তা কমে ১১ লাখ ৪২ হাজারে নেমেছে।

গাড়ির কলামে তার আগের হলফনামায় ২৫ লাখ টাকার গাড়ি থাকলেও নতুন হলফনামায় তার গাড়ির কলামে আছে মাত্র ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দামের একটি গাড়ি।

তার হাতে নগদ টাকা আছে ১ লাখ ৮১ হাজার ২১০ টাকা। যা আগে ছিল ৮০ হাজার ৭৫০ টাকা। বউয়ের হাতে আগে ছিল ২ লাখ টাকা, বর্তমানে আছে ৪১ হাজার টাকা। ৩০ হাজার টাকার সঞ্চয় আমানত আগে ছিল বর্তমানে কোন সঞ্চয় আমানত নেই। তার নিজের কোন স্বর্ণ অলঙ্কার ছিলনা। বর্তমানে ৬০ হাজার টাকার অলঙ্কার আছে। বউয়ের আগে ৬০ হাজার টাকার অলঙ্কার থাকলেও বর্তমানে আছে ৪০ হাজার টাকার। আসবাবপত্র ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী আগে ছিল ৯০ হাজার টাকার, বর্তমানেও তাই আছে।

৫ বছর আগে আকবর হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে তিনি ৪০ লাখ টাকার ঋণী ছিলেন। বর্তমানে তার কাছে রয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৩ টাকার ঋণ। সাথে যুক্ত হয়েছেন মো. আলমগীর নামে আরেক ব্যক্তি। যার কাছে ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

এফএম/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!