এক মাস ধরে বন্ধ চবির তিন জোড়া শাটল ট্রেন, ভোগান্তি চরমে

নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু

মাইলেজ ইস্যুতে লোকো মাস্টারদের আন্দোলন চলাকালে লোকো মাস্টার সংকটে বন্ধ রাখা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তিন জোড়া শাটল ট্রেন। তবে দুই দিনের মাথায় লোকো মাস্টারদের আন্দোলন স্থগিত হলেও এক মাসেও চালু হয়নি সেই তিন জোড়া শাটল ট্রেন। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী।

এরই মধ্যে মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ায় এই ভোগান্তির মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে শাটলের ছাদে করে যাতায়াত করছেন। আবার কেউবা বাড়তি ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন বিকল্প উপায়ে।

জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি থেকে মাইলেজ ইস্যুতে কর্মবিরতিতে যায় লোকো মাস্টাররা। এতে করে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্থবির হয়ে পরে। লোকো মাস্টার সংকটে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জোড়া শাটল ট্রেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে দুইদিনের মাথায় লোকো মাস্টাররা আন্দোলন স্থগিত করলে ফের স্বাভাবিক হয়ে যায় সারাদেশের রেল যোগাযোগ। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন চালু হয়নি গত একমাসেও। এর আগে অনিবার্য কারন দেখিয়ে গত নভেম্বর মাস থেকে বন্ধ রাখা হয় দুই জোড়া ডেমু ট্রেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, এমনিতে শিক্ষার্থীর তুলনায় শাটল সংখ্যা অপ্রতুল। এর মধ্যে তিন জোড়া শাটল ও দুই জোড়া ডেমু বন্ধ থাকায় ভোগান্তির মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুণ। শাটলে সিট খালি তো দূরের কথা তিল ধারনের ঠাঁই পর্যন্ত নেই। বাধ্য হয়ে অনেককে ঝুঁকি নিয়ে শাটলের ছাদে উঠতে হচ্ছে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পারে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোন সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। রেলমন্ত্রী নতুন শাটল দেওয়ার ঘোষণা দিলেন, সেটা পাওয়া তো দূরের কথা আগে যেগুলো ছিল সেগুলোও গায়েব হয়ে গেছে। শাটলের অভাবে ভোগান্তি অসহনীয় হয়ে গেছে।’

গণিত বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুশফিক রাহাত বলেন, ‘ক্লাস পরীক্ষা সবকিছু চলছে অথচ পর্যাপ্ত শাটল নেই। এরকম কষ্ট করে আগে কখনো আসি নাই। দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বানিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার কাছে যে তথ্য আছে সেটা হলো বিভিন্ন লোকবল, ইঞ্জিন, কোচ সংকটের কারনে ট্রেনগুলো বন্ধ আছে। তবে চালুর বিষয়ে জানতে হলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ লোকো মাস্টার সংকটে নিয়মিত শিডিউলে ট্রেন চালাতে পারছে না। গতকাল রাতে রেলওয়ের জিএমের সাথে কথা হয়েছে। আজ থেকে সম্ভব না হলে আগামীকাল থেকে নিয়মিত শিডিউলে ট্রেন চালানোর বিষয়ে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।’

তবে এ বিষয়ে জানতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এমআইটি/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!