আনোয়ারায় পুত্রকে সাক্ষী করে পিতার সম্পদ আত্মসাত!

পিতামাতার কাছে সন্তান সবসময় অমূল্য। অসীম ত্যাগ আর কষ্টে সন্তানদের লালনপালন করেন,মানুষ করেন। অথচ কিছু সন্তান কখনোই মানুষ হয় না। বাবার চিকিৎসার ব্যয় মেটানোর নাম করে তার সর্বস্ব সম্পদ আত্মসাৎ করে তারই সন্তান!

এমন ঘটনাটি ঘটেছে আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক গ্রামে। সেই অভা্গা পিতার নাম আবদুল রহমান ফকির। নিজের নাবালক পুত্রকে সাক্ষী করে জালাল উদ্দিন প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছেন পিতার বসত ভিটাসহ অন্য জমি। এ ঘটনায় নিঃস্ব হয়েছেন ওই পরিবারের বাকি সদস্যরাও।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,২০১৭ সালের আনোয়ারা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মুন্সিদের সহযোগিতায় স্কুল পড়ুয়া পুত্রকে সাক্ষী করে জালাল উদ্দিন তার বাবার কাছ থেকে চার শতক জমি বিক্রি করার নাম করে তিনটি আলাদা দলিলে স্বাক্ষর নিয়ে হাতিয়ে নেয় বসত-ভিটাসহ ২৯.৭২ শতক জমি।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, আবদুল রহমান ফকিরের স্ত্রী দুই ছেলে তিন মেয়ের নিয়ে চলছিলো সুখের সংসার। পিতার সংসারের অভাব দূর করতে জীবনের অর্ধেক সময় পার করে দিয়েছেন তার বড় ছেলে মোহাম্মদ শফি। ছাব্বিশ বছর ওমানে কাজ করে পিতার পরিবারকে স্বাচ্ছন্দ্য দিয়েছেন তিনি।

আবদুল রহমান ফকিরের পুত্র মোহাম্মদ শফি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ওমানে প্রবাস জীবন কাটিয়েছি শুধু সংসারের অভাব দূর করার জন্য। ওখান থেকে বাবার কাছে টাকা পাঠিয়ে এ কিছু সহায়-সম্পদ করেছিলাম। সবাইকে নিয়ে চলছিলো সুখের সংসার। হঠাৎ করে বাবার অসুস্থতার কারণে আমার আপন ভাই জালাল উদ্দিন চিকিৎসা করান। চিকিৎসা বাবদ খরচ ফিরিয়ে দিতে বাবা আবদুল মান্নান নামে এক ব্যক্তিকে চার শতক জমি বিক্রি করার জন্য বাবাকে নিয়ে যায় সাব রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যান জালাল। ওখানে মুন্সিদের সহযোগিতায় বাবার কাছ থেকে বাড়িভিটা ও জমি নিজের নামে হস্তান্তর করেন।এরমধ্যে গত সপ্তাহে আমার বাবাও মারা গেছেন। আমাদেরকে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশ্বাস দিয়েছেন ব্যবস্থা নেয়ার। তাই আমরা এখনো নিজ বসতবাড়িতে আছি। তবে সবসময় জালালের লোকজন আমাদেরকে বের করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। যে কোন মুহূর্তে আমি ঘরছাড়া হবো।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দলিল সৃজনকারী মুন্সি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, আমি সব কাগজপত্র দেখে তাদের জমি রেজিস্ট্রি করিয়েছি। সেটি ছিলো পিতা পুত্রকে দান করার দানপত্র দলিল। তবে স্বাক্ষী নাবালক কী না সে বিষয়ে আমার ধারণা নেই।

এ বিষয়ে জালাল উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বৈরাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, এ বিষয় নিয়ে অনেকবার সালিশি বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। তবে জালাল উদ্দিনের কাছ থেকে এখনো সমাধানের আশা পাইনি। বর্তমানে সে পলাতক রয়েছে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!