সন্দ্বীপে সাবেক চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের যাবজ্জীবন খুনের মামলায়

ন্যায়বিচারের জন্য হাইকোর্টে যাবেন আসামিরা

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যানসহ ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম মোজাম্মেল হকের আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিতরা হলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান, জামাল, আবদুর রহমান, আহসান উল্লাহ, আবদুর রহমান, আলতাফ হোসেন, মেহরাজ, মান্নান, আশরাফ, ফারুক ও ফুল মিয়া। তাদের মধ্যে আবদুর রহমান ও আশরাফ ছাড়া বাকি সবাই কারাগারে রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আইয়ুব খান। তিনি জানান, এই ১১ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানার টাকা না দিলে আরও এক বছর জেলে থাকতে হবে তাদের।

রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, ১ নম্বর আসামির বিরুদ্ধে গুলি করে মনিরকে হত্যা নিশ্চিত করার যে অভিযোগ সেটি সত্য বলে প্রমানিত হয়নি। তবে সকল আসামি মিলে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করার আঘাতজনিত কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মনির মারা গেছে। এক্ষেত্রে ১ নম্বর আসামি দাবি করেছেন তিনি ঘটনার সময় ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। সেটিও প্রমাণিত হয়নি।

এটি কোনো পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা ছিল না বলে মন্তব্য করে বিবাদি পক্ষের আইনজীবী শাহাবুদ্দিন মাহমুদ বলেন, এই হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত বলে প্রমাণিত হয়নি। ঘটনাস্থলে দুই পক্ষের মধ্যে একটা সংঘাত হয়েছে সেই সংঘাতে মনিরের মৃত্যু হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই স্থানীয় বিরোধের জের ধরে সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের জেলে পাড়ার সামনে মনিরুল আলম নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে ও কুপিয়ে করে হত্যা করা হয়। তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমানের নেতৃত্বে মনিরুলকে হত্যা করা হয় চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে সন্দ্বীপ থানায় মামলা করে মনিরুলের আলমের পরিবার। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মামলার অভিযোগপত্রগঠন করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আইয়ুব খান জানান, মামলাটি আগে অন্য আদালতে ছিল। গতবছর লকডাউনের আগে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর হয়। একবছরের ও কম সময়ের মধ্যে মামলার বিচারকাজ নিস্পত্তি হয়েছে। এ মামলায় মোট ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য শেষে আদালত ১১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন রায় দেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানার টাকা না দিলে আসামিদের আরও এক বছর জেলে থাকতে হবে তাদের, জানান পিপি আইয়ূব খান। ১১ জনের মধ্যে শুরু থেকেই পলাতক ছিল ও বাকি ৯ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে মামলার রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে মামলার ১ নং আসামি মাকসুদুর রহমানের মেয়ে মেশরাদুল খানম ইমা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, মনিরুল আলমকে প্রকাশ্যে গুলি ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেছিল তার পরিবার। কিন্তু সেই অভিযোগ আদালতে প্রমান হয়নি। তারপরও আমার বাবাকে যাবজ্জীবন দেয়া হলো। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আমরা হাইকোর্টে যাব।

আইএমই/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!