শালিস ডেকে লোক পেটানো চেয়ারম্যান মিরানের স্বভাব

গরু চুরির অপবাদ দিয়ে মা মেয়েকে নির্যাতন করা ইউপি চেয়ারম্যান মিরানের লোক পেটানোর অভ্যাস নতুন নয়। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার প্রভাব খাটিয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন তিনি। মাজারের খাদেম, মানসিক প্রতিবন্ধী নারী বা শিক্ষক তার হাত থেকে নিস্তার পায়নি কেউ। এমন ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মামলাও।

এরপরও দমেননি তিনি। সর্বশেষ গরু চুরির দায় দিয়ে তিন নারীসহ পেটালেন পাঁচজনকে। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে বসবাসকারী অনেকেই এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেও প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি।

এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৪ মে হারবাং শাহ ছুফি মাজারের খাদেম মো.ফয়েজ আহমদকে সালিশ বৈঠকের নাম করে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর করেছিল ইউপি চেয়ারম্যান মিরান। ওই মারধরের ঘটনার পর মাজারের খাদেম গুরত্র অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার কিছুদিন পরেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের আছে।

এছাড়াও হারবাং লালব্রিজ এলাকার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন, সোহেল উদ্দিন, ৭নম্বর ওয়ার্ডের রাশেদ প্রকাশ কালু ড্রাইভারকে সালিশ বৈঠকের নামে মারধর করা হয়। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে হারবাং স্টেশনের মানসিক ভারসাম্যহীন দেলোয়ার হোসেন নামের এক যুবককে মারধরের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

মৃত খাদেম মো.ফয়েজ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান শাহ্ বলেন, ‘আমার বাবাকে সালিশি বৈঠকের নাম করে বাড়িতে ডেকে নিয়ে নিজেই লাঠি দিয়ে পিটান চেয়ারম্যান মিরান। এরপর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেশ কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি মারা যান। মিরানসহ দুজনকে আসামি করে কক্সবাজার আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছি। মামলাটি এখনও বিচারাধীন। মিরান এমন অনেক লোককেই সালিশের নাম করে যখন তখন যেভাবে খুশি গায়ে হাত তুলতো। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত থাকায় কেউ সাহস করে মুখ খুলতো না।’

হারবাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মিরান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে বেশ বেপরোয়া হয়ে পড়ে। সে প্রায়ই সালিশের নাম করে মানুষকে বাড়িতে নিয়ে পেটাতো। তার হাত থেকে রেহাই পায়নি মানসিক ভারসাম্যহীন লোকও। তারপরও সবকিছুর শেষ আছে, কিন্তু তার শেষ কোথায়?’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে গরু চুরির অপবাদে মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে কিছু লোক। পরে তাদের রশি দিয়ে বেঁধে প্রকাশ্যে সড়কে ঘুরিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরান ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় দফায় মারধর করেন মিরান। এতে তারা গুরুতর আহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!