কুখ্যাত ‘শান্তি কমিটি’র মাথা ছিলেন আমীর খসরু মাহমুদের বাবা

রাজাকার, আলবদর ও আলশামসের সরকারঘোষিত তালিকায় নাম রয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর কাট্টলীর মাহমুদুন নবী চৌধুরীর নাম। তিনি বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ‘স্থায়ী কমিটি’র সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পিতা। মাহমুদুন নবী চৌধুরীর পিতার নাম খাদেম আলী চৌধুরী এবং মায়ের নাম আলফুন নেছা। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় প্রণীত তালিকার ২০০ ও ২০৪ নম্বর ক্রমিকে একাত্তরে শান্তি কমিটির প্রভাবশালী এই নেতার নাম রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চট্টগ্রাম জেলা শান্তি কমিটির আহবায়ক ছিলেন মাহমুদুন নবী চৌধুরী। শান্তি কমিটির গঠন ও তৎপরতা সম্পর্কিত বিভিন্ন দলিলে পাকিস্তানের পক্ষে মাহমুদুন নবী চৌধুরীর সক্রিয় তৎপরতার প্রমাণ মিলেছে। তিনি ১৯৫৪ সালের পূর্ব পাকিস্তানের আইনপরিষদ নির্বাচনে ডবলমুরিং-সীতাকুণ্ড আসন থেকে জয়লাভ করেন এবং যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করলে তিনি প্রথমে গণযোগাযোগ মন্ত্রী ও পরে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিত্ব লাভ করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পিডিপির প্রার্থী হিসেবে এমএনএ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। ১৯৯৫ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামে তার মৃত্যু হয়।

২০১২ সালের ২১ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সরাসরি নির্যাতনের শিকার ব্যবসায়ী এম সলিমুল্লাহ জেরায় বলেন, ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামে শহরে আলবদর, আলশামস ও রাজাকারের দুটি পৃথক শান্তি কমিটি গঠন করে। সেই শান্তিকমিটির একটাতে ফজলুল কাদের চৌধুরী ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, অন্যটিতে মাহমুদুন নবী ছিলেন।

২০১৩ সালের ৪ জুন বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জেরায় বলেছিলেন, একাত্তরে চট্টগ্রামে শান্তি কমিটির দুটি শাখা ছিল। এর একটির প্রধান ছিলেন মাহমুদুন নবী চৌধুরী, অন্যটির প্রধান ছিলেন সুলতান আহমেদ।

প্রসঙ্গত, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা পাক হানাদার বাহিনীকে পথঘাট চেনাতে ও মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছে, তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। প্রথম দফায় ১০ হাজার ৭৮৯ রাজাকার, আলবদর ও আলশামসের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। যাচাই-বাচাই করে ধাপে-ধাপে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!