শফীর মৃত্যুর পেছনে ৪৩ হেফাজত নেতার হাত দেখছে পুলিশ

আদালতে পিবিআইর প্রতিবেদন

হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির শাহ আহমদ শফীকে হত্যার প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় সংগঠনটির আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল তৃতীয় জজ আদালতে এ প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই।

শফী হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই-এর পরিদর্শক মো. মনির হোসেন সোমবার আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান।

প্রসঙ্গত গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী মারা যান। তিনি হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত আল-জমিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ১৯৮৬ সাল থেকে। বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের বেফাক) সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন আহমদ শফী।

শফীর ছেলে আনাসকে চট্টগ্রামের দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক পদ থেকে অব্যাহতিসহ ছয় দফা দাবিতে ১৬ সেপ্টেম্বর জোহরের নামাজের পর থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্ররা। তারা মাদ্রাসার সবকটি ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। আনাসসহ কয়েকজন শিক্ষকের কক্ষে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহীকে মাদ্রাসার ভেতরে পেয়ে মারধর করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা।

ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে মাদ্রাসাটির মহাপরিচালকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে সরে দাঁড়ান আহমদ শফী। একই সঙ্গে তার ছেলে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসার শিক্ষকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয় শুরা কমিটি। দাবি মেনে নেওয়ায় ওই দিন রাতে ছাত্ররা আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এদিকে আন্দোলনের সময় মাদ্রাসার একটা রুমে বয়োবৃদ্ধ শফিকে আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন ও ঠিকমতো খাবার ওষুধ না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। আন্দোলন স্থগিত হলে গুরুতর অবস্থায় শাহ আহমদ শফীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল নিয়ে যাওয়ার পথেও তার অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে নাক থেকে অক্সিজেনের নল খুলে নেওয়ার অভিযোগও উঠে তাদের বিরুদ্ধে।

পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় হেফাজতে ইসলামের সর্বোচ্চ নেতা ও হাটহাজারী মাদ্রাসার দীর্ঘদিনের পরিচালক আহমদ শফী মারা যান।

পরে শফীর মৃত্যুর ঘটনায় তার শ্যালক মো. মাইনুদ্দীন বাদী হয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের জৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম শিপলু কুমার দের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত পিবিআইকে সেই মামলার তদন্তের নির্দেশ দেয়।

একই বছরের ১৫ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে হেফাজতের নতুন আমির নির্বাচিত হন জুনায়েদ বাবুনগরী। এর আগে তিনি সংগঠনটির মহাসচিব ছিলেন। ১৫১ সদস্যের কমিটিতে আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীসহ তার অনুসারীদের কাউকে রাখা হয়নি।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!