রংপুরকে হ্যাটট্রিক হার উপহার দিয়ে জয়ের ধারায় কুমিল্লা

শেহজাদের পর সাব্বির-সৌম্যের ব্যাটে রান, মালানের ঝড়

বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী দিনে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের কাছে ১০৫ রানে হেরেছিল রংপুর রেঞ্জার্স। এবার চট্টগ্রামে গিয়েও সেই কুমিল্লার বিপক্ষে হার এড়াতে পারল না নবী-মোস্তাফিজদের দল। অথচ মোহাম্মদ শেহজাদের ঝড়ে চ্যালেঞ্জিং পুঁজিই পেয়েছিল রংপুর রেঞ্জার্স। ভানুকা রাজাপক্ষে, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান ও ডেভিড মালান – কুমিল্লার টপ অর্ডার এই চার ব্যাটসম্যানকে নিয়েই। এই চার ব্যাটসম্যানের ব্যাটই হাসল রংপুরের বিপক্ষে। আর তাতেই রংপুরের দেওয়া ১৮২ রানের লক্ষ্য অনায়াসে পার করে ফেলল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। রংপুরকে রেঞ্জার্সকে ছয় উইকেটে হারিয়েছে তারা। সৌম্য সরকার- ভানুকা রাজাপাকশের উড়ন্ত শুরুর পর তিনে নেমে প্রয়োজনীয় রান পেলেন সাব্বির রহমান। ওভারপ্রতি দশের উপর রান নেওয়ার চাহিদায় ঝড় তুলে শেষটা করলেন ডেভিড মালান। রংপুরকে হারের বৃত্তে রেখে তাই জিতল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এটি দ্বিতীয় জয় কুমিল্লার। সমান ম্যাচে তৃতীয় হার রংপুরের।

শেষ তিন ওভারে জিততে ৩৫ রান দরকার ছিল কুমিল্লার। লুইস গ্রেগরির ১৮ তম ওভার থেকে ১৩ রান নেয় কুমিল্লা। ডেভিড মালান –দাসুন শানাকা মোস্তাফিজের ১৯তম ওভার থেকে নেন আরও ১১ রান। শেষ ওভারে ১১ রানের চাহিদা দাসুনকে হারিয়ে ৪ বলেই তুলে নেন মালান। ২৪ বলে ৪২ করে অপরাজিত থাকেন এই বাঁহাতি। এর আগে ৪০ বলে ৪৯ করে সাব্বির আর ৩৪ বলে ৪১ করে অবদান রাখেন সৌম্য।

সৌম্যের বিদায়ের পর ডেভিড মিলানকে নিয়ে কুমিল্লাকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান সাব্বির রহমান। যদিও নিজের অর্ধশতক থেকে ১ রান দূরত্বে আউট হয়ে যান সাব্বির।
সৌম্যের বিদায়ের পর ডেভিড মিলানকে নিয়ে কুমিল্লাকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান সাব্বির রহমান। যদিও নিজের অর্ধশতক থেকে ১ রান দূরত্বে আউট হয়ে যান সাব্বির।

১৮২ রান তাড়ায় নেমে আল-আমিন জুনিয়রকে টানা চার বাউন্ডারিতে শুরু সৌম্য সরকারের। আরেক পাশে ভানুকা রাজাপাকশেও পরে একই রুদ্রমূর্তি। প্রথম ৫ ওভারেই কুমিল্লার বোর্ডে জমা ৫৪। পাওয়ার প্লের শেষ বলে রাজাপাকশে আউট হওয়ার আগে ৬১। তবে দ্বিতীয় উইকেটে কমে যায় রানের গতি। শুরুতে মেরে খেলতে থাকা সৌম্য কিছুটা স্থির হয়ে যান। ক্রিজে আসা সাব্বির রহমান সিঙ্গেল পেতেও ভুগছিলেন। এই সময়ে মুগ্ধ করেছেন তরুণ মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। বেশ ভালো গতিতে দারুণ জায়গায় বল ফেলেছেন।

রান আটকে রাখার কাজ হয়েছে। পরে মিলেছে উইকেটও। ৩৪ বলে ৪১ করে সৌম্য মুগ্ধের গতির তারতম্য না বুঝে বল তুলে দেন আকাশে। সৌম্যর আউটের পর কিছুটা গা ঝাড়া দিয়ে উঠেন সাব্বির। বলের চেয়ে রান কম করে এগুতে থাকা সাব্বির শেষ দিকে গিয়ে কিছুটা পুষিয়ে দেন। ম্যাচটাও শেষ করে আসার সুযোগ ছিল তার। কিন্তু ৪০ বলে ৪৯ করে মোস্তাফিজের বলে থামেন সাব্বির।

দুপুরে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া রংপুর রেঞ্জার্সের বড় সংগ্রহের নায়ক মূলত একজনই। আফগানিস্তানের মোহাম্মদ শেহজাদ তার টিপিক্যাল তেড়েফুঁড়ে মারার অ্যাপ্রোচ নিয়ে জ্বলে উঠেছিলেন এদিন। গায়ের জোরে সীমানা ছাড়া করেছেন একের পর এক বল। আরেক ওপেনার নাঈম শেখ রান আউটে কাটা পড়লেও শুরুতে উইকেট হারানোর ধাক্কা তাই গায়ে লাগেনি রংপুরের। ২০ বলে ফিফটি করা শেহজাদ থামেন ২৭ বলে ৬১ করে। এই ভিত থেকে দুশো পেরিয়ে যেতে পারত রংপুর।

কিন্তু টম অ্যাবেল, মোহাম্মদ নবি, লুইস গ্রেগরিরা থিতু হয়েও টানতে পারেননি। অন্তত আরও ১৫ রান কম থাকার মাশুল তাই গুনেছে রংপুর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর রেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৮১/৮ ( শেহজাদ ৬১, নাঈম ৮, আবেল ২৫, আল-আমিন ১, নবি ২৬, গ্রেগরি ২১, নাদিফ ১৫, জহুরুল ০, সানি ১৫*, মোস্তাফিজ ১* ; মুজিব ২/২৫, রনি ০/৩৯,, সানজামুল ১/৩৮, আল-আমিন ১/৪৫, শানাকা ০/১৬, সৌম্য ১/১৬)
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ১৯.৪ ওভারে ১৮২/৪ (রাজাপাকসে ৩২, সৌম্য ৪১, সাব্বির ৪৯ , মালান ৪২* ,দাসুন ১২, ইয়াসির ০* ; আল-আমিন জুনিয়র ০/১৭, নবি ১/২৫, মুকিদুল ১/২৬, গ্রেগরি ০/, মোস্তাফিজ ১/৩৫, আবেল ১/২১)
ফল: কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: ডেভিড মালান (কুমিল্লা)

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!