‘ময়না’য় আড়াল পুলিশের কৃতিত্ব!

বায়েজিদে শাহাদাত হত্যা

থানা পুলিশের একটি টিম তখন ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা রহমান ময়নার বাসায়। ময়না ব্যস্ত ছেলের সাথে ফোনালাপে। পুলিশ তাদের উপস্থিতি বুঝতে দেয়নি ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তিকে। কৌশলে লাউড স্পিকার দিয়ে নিশ্চিত হয় শাহাদাতের খুনে অভিযুক্ত ফরহাদুর রহমান আগুনের অবস্থান। আগুন তখন মায়ের কাছে টাকা দাবি করছিল চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়ার। পুলিশ কৌশলে মাকে দিয়ে বলালেন, তুমি যেখানে আছো সেখানেই থাকো, আমি টাকা নিয়ে আসছি। আগুন তখন অবস্থান করছিল তার ফুফুর বাসায়, কর্ণফুলী থানার চরপাথরঘাটায়। মা ময়নাকে কোন সুযোগ না দিয়ে পুলিশ তাকে সঙ্গে নিয়ে আগুনকে গ্রেফতার করল। এমনটিই জানা গেছে বায়েজিদ থানা সূত্র ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা নাসির হোসেনের সাথে কথা বলে।

এ ব্যাপারে নগর পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার বিজয় বসাক বলেন, আসামি গ্রেফতারে পুলিশের অনেক কৌশল আছে। পুলিশ তার নিজস্ব কৌশলে খুনের দায়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। এখন কেউ যদি ক্রেডিট নিতে চায় আমাদের কী বলার আছে?

বায়েজিদ থানার ওসি আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, আসামি গ্রেফতারে আমরা তার মায়ের সহযোগিতা নিয়েছি। এখন যে যেভাবে দেখেন। মূল কথা হলো অল্প সময়ের ব্যবধানে আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পেরেছি।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে সরেজমিনে হিলভিউ আবাসিক এলাকায় গিয়ে দেখা যায় শত শত মানুষ বিক্ষোভ শেষে শাহাদাতের নামাজে জানাজার প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্বজনরা আহাজারি করছেন। মাগরিবের পর শাহাদাতের দাফন শেষে এলাকাবাসী আবারো মিছিল করেছে বিচারের দাবিতে।

শাহাদাতের ছোট ভাই অপু ও প্রতিবেশী আবদুল কাদের জানান, ফাতেমা রহমান ময়না তাদের পরিবারকে মামলা না করার হুমকি দিচ্ছে। ছেলের যদি বড় কোন সাজা হয়ে যায় তাহলে তারা শাহাদাতের পরিবারকে দেখে নেবে।

অভিযোগ অস্বীকার করে ফাতেমা রহমান ময়না চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নিহত শাহাদাতের ছোট ভাই অপু আমাকে মারার হুমকি দিচ্ছে। মিছিল নিয়ে আমার বাসা পর্যন্ত এসে ঘুরে গেছে।

বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমেনা বেগম বলেন, নিহত শাহাদাত স্থানীয় খাজা গরীবে নেওয়াজ কুলিং কর্ণারে চা পান করছিলেন। আগুন দক্ষিণ দিক থেকে (তাদের বাসার দিকে থেকে) এসে শাহাদাতের পিছন এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে। দোকানের ভেতরেই ছুরির আঘাত নিয়ে কাতরাচ্ছিলেন শাহাদাত। আগুন দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। দোকানি জয় কাস্টমারদের সহায়তায় শাহাদাতকে রাস্তার মাঝখানে নিয়ে আসে। আশপাশের দোকানগুলো রক্তাক্ত শাহাদাতকে দেখে ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে চলে যায়।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!