চট্টগ্রাম আবাহনীর রেকর্ড টানা ষষ্ঠ জয়

চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ

প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে রেকর্ড টানা ষষ্ঠ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে এসেছে ২০১৬-২০১৭ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। অথচ এবারের লিগটি তাদের শুরু হয়েছিল হার দিয়ে। এমনকি অবিশ্বাস্যভাবে তারা হেরে বসে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচেই। যদিও আবাহনীর কর্মকর্তারা প্রথম তিনটি ম্যাচ হারের পেছনে আম্পায়ারের পক্ষপাতের অভিযোগ আনেন। তবে চতুর্থ রাউন্ডে এসে নিজেদেরকে ফিরে পায় আবাহনী। সিটিকে ৭৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে এবারের লিগে প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছিল আবাহনী।

পঞ্চম রাউন্ডে আবাহনী হারায় শতদল ক্লাবকে, ষষ্ঠ রাউন্ডে তারা লিগে প্রথম হার উপহার দেয় পাইরেটস অব চিটাগাংকে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) আবাহনী ৩ উইকেটে হারায় আরেক শক্তিশালী ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবকে। রেকর্ড এ জয়ে দারুণ খুশি আবাহনীর খেলোয়াড় কর্মকর্তা এবং দলের স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ফোর এইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএস জামিল।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় ব্রাদার্স ইউনিয়ন। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে দেন ফারদিন খান ও মাঈনুদ্দিন রুবেল। আবাহনীর বাহাতি স্পিনার আবু বকরের প্রথম শিকার হওয়ার আগে নিজের নামের পাশে মাত্র ১৩ রানের পুঁজি গড়তে পারেন রুবেল। দু’ওভার পর শামসুদ্দিন বাপ্পার বলে আউট হয়ে যান ৪৪ বলে ৩২ রান করা অপর উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ফারদিন। ইনফর্ম ব্যাটসম্যান মাহবুবুল করিম ঝোড়ো সূচনা করলেও তা বেশিক্ষণ টেনে নিতে পারেননি।

সাজ্জাদ হোসাইনের বলে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে তিনি খেলেন ১৭ বলে ২৭ রানের ইনিংস। এরপর আব্দুল গফুর পন্টি ও সদ্য জাতীয় দলে ডাক পাওয়া ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলী রাব্বি দুজনই সাজ্জাদের শিকার হওয়ার আগে করেন ১০ রান করে। ১০৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা ব্রাদার্সকে ৬ষ্ঠ উইকেট জ‍ুটিতে ৮৪ রানের জুটি গড়েন দুই তারকা খেলোয়াড় সোহরাওয়ার্দী শুভ ও ধিমান ঘোষ। ৬৪ বলে ৪৫ রান করা শুভকে বাপ্পার হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন আবু বকর। এরপর ৫৬ বলে ৪৮ রান করা ধীমানকে ফেরান আবাহনীর দলনেতা কামরুল। এই দুজনের আউটের পর ব্রাদার্সের বাকি ব্যাটসম্যানরা আবাহনীর বোলারদের সামনে সুবিধে করতে না পারায় ৪৪.২ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২১২ রান করতে সক্ষম হয় তারা। আবাহনীর হয়ে আবু বক্কর তুলে নেন ৪টি উইকেট। এছাড়া সাজ্জাদ নেন ৩টি এবং আগের ম্যাচে ৬ উইকেট নেয়া কামরুল নেন ২টি উইকেট।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভ‍ারেই সাজ্জাদকে হারায় আবাহনী। এরপর দলীয় ১৭ রানে ১৬ বলে ১৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। দলীয় রান ৫০ এর কোটা পূর্ণ হতে না হতেই আবাহনী হারিয়ে ফেলে আরও ২ উইকেট। ৫ম উইকেট জুটিতে উইকেট রক্ষক সাব্বির হোসাইনকে নিয়ে ব্রাদার্সের শিবিরে জয়ের আশার স্বপ্নকে তছনছ করে দেন আবাহনীর দলনেতা কাজী কামরুল ইসলাম। সাব্বির ও কামরুল মিলে আবাহনীর রান নিয়ে যান ২০৪ এ। বরাবর ২০০ বলে ১৫৪ রানের ম্যাচ জেতানো জুটি গড়েন এই দুজন। এবারের লিগে নিজের প্রথম শতক হাঁকানো থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে দূর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে যান সাব্বির। তার ১০৩ বলে করা ৯৭ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল এক ডজন বাউন্ডারি দিয়ে। সাব্বির আউট হয়ে গেলেও কামরুল শেষ পর্যন্ত ৬৬ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।

এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের অন্য ম্যাচে সহজ জয় পেয়েছে পাইরেটস অব চিটাগাং। আগের ম্যাচে বন্দরের কাছে হেরে শিরোপা দৌড়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়া পাইরেটস ৬ উইকেটে হারায় মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রকে। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে তানভিরের অর্ধশতক ও জুয়েলের ৪৪ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভ‍ারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০৭ রান করে মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্র। জবাবে পাইরেটসকে দারুণ সূচনা এনে দেন সৌরভ ও আরম‍ান। সৌরভ ৪১ বলে করেন ৬২ রান এবং আরমান ৭৪ রান করতে খেলেন ৯৪ বল। এ দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ৩৭ ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের দেখা পেয়ে যায় পাইরেটস।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!