মুক্তিযোদ্ধারাই উপেক্ষিত চট্টগ্রাম বিএনপির শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের সভায়

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় উপেক্ষিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা। একজন বক্তব্য দিতে পারলেও অপরজনকে বক্তব্যের মাঝপথে থামিয়ে দেন নগর বিএনপির এক নেতা। এমন আচরণে মনোক্ষুণ্ন দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নগর বিএনপির মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় নগর বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবন মাঠে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে দুজন স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন। একজন গেরিলা কমান্ডার সাহাব উদ্দিন, যার নেতৃত্বে মদুনাঘাট সাবস্টেশন উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি নগর বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদকও। অপরজন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন। তিনি গেজেটভুক্ত নন। তবে গেজেটভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। ৭১’এর রণাঙ্গণে তার সঙ্গীরা নিশ্চিত করেছেন তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

এএম নাজিম উদ্দিন বক্তব্য দিলেও নগর বিএনপিতে তিনি বরাবরের মতো উপেক্ষিত বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায়। মঞ্চে তিনিই একমাত্র কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার পরও প্রধান অতিথি কিংবা প্রধান আলোচকের সম্মান দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে এএম নাজিম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না। দলের জন্য কাজ করছি, মূল্যায়ন একদিন হবে। আমার অর্জন তো কেউ স্বীকৃতি না দিলেও, মূল্যায়ন না করলেও কেড়ে নিতে পারবে না। দলই মূল্যায়ন করবে।’

কমান্ডার সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘দলের ক্রান্তিকালে এসব নিয়ে কথা বলাটা ঠিক হবে না। আওয়ামী লীগ কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা নিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে কটাক্ষ করেন, আক্রমণ করেন। আওয়ামী লীগের নেতা মোশতাকের সাথে মিশিয়ে ফেলেন। আমি বিষয়গুলো ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলাম। মঞ্চের সামনে তরুণ নেতাকর্মীরা ছিল। যাদের অনেকের জন্ম স্বাধীনতার পরে। ১৫ আগস্টেরও পরে। সঠিক ইতিহাসটা তাদের জানা উচিত। কিন্তু বার বার সংক্ষেপ করতে বলাতে আমি বক্তব্য অসম্পূর্ণ রেখেই শেষ করে দিয়েছি।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক নেতা জানান নগর বিএনপির সহ-সম্পাদক শাহেদ বক্স বারবার বক্তব্য সংক্ষেপ করার তাগাদা দিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ৯টায় শাহেদ বক্সের মুঠোফোনে ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।

আলোচনা সভা বিকেল ৩টায় পূর্ব নির্ধারিত থাকলেও নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন সভা শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে উপস্থিত হন। এতে নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মতামত জানতে রাত সাড়ে ৯টা ও ১০টায় তার মুঠোফোনেও ফোন করে সাড়া পাওয়া যায়নি।

নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘সভাপতি শেষ সময়ে এসেছেন। সাহাব উদ্দিন ভাই বক্তব্য শেষ করতে পারেননি সত্য। কিন্তু আমি এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে পারবো না।’

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এসএম বদরুল আনোয়ার, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপত্বি এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এডভোকেট আবদুস সাত্তার, এডভোকেট মফিজুল হক ভূঁইয়া, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মো. শাহ আলম প্রমুখ।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!