মধ্যরাত থেকে সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ, জেলেরা বিপাকে

বুধবার (১৯ মে) দিবাগত মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে দেশের জলসীমায় ৬৫ দিনের জন্য সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। মৎস্য অধিদফতর প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে।

সাগরে সব প্রজাতির মাছের প্রজনন বৃদ্ধি ও ইলিশ বড় হওয়ার সুযোগ করে দিতেই এই পদক্ষেপ বলে জানা গেছে। তবে এ সিদ্ধান্ডে লকডাউনের এ দিনে বিপাকে পড়েছেন জেলেরা। সরকারি বরাদ্দকৃত চাল সংসারের কোন অভাবই ঘুচাবে না বলে বলেছেন জেলেরা।

সাগরে সব ধরনের মাছ ধরায় ৬৫ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে বুধবার রাত ১২টা ১ মিনিটে।

মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা পালনে জেলেদের উৎসাহিত করতে দুই লাখ ৯৮ হাজার ৫৯৫ জন জেলের প্রত্যেকে ৫৬ কেজি চাল সহায়তা পাবেন। এ জন্য ১৬ হাজার ৭২১ দশমিক ৩২ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ইকবাল হোসেন মাতুব্বর গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুধু চাল দিয়ে ক্ষুধা নিবারণ করা যায় না।’ তিনি মৎস্য ভবনের সভায় জেলেদের চাল সহায়তার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য কেনার জন্য নগদ অর্থ সহায়তারও দাবি জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বিভিন্ন মেয়াদের নিষেধাজ্ঞা পালন করায় নদী-সাগরে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় জেলেদের জীবনমান বাড়েনি।

জানা গেছে, মে মাসের শেষের দিক থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজননকাল। এ কারণে সাগরের মাছসহ প্রাণিজসম্পদ রক্ষায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের পাশাপাশি নদীর মোহনাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।

কিন্তু এ সরকারি সিদ্ধান্তে বিপাকে উপকূলীয়বাসী জেলেরা। আনোয়ারার দক্ষিণ গহিরা এলাকার জেলে ওসমান বলেন, ‘৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে তার সংসার। পেটের যন্ত্রণায় প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, ঝড়-তুফান ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাই। একদিন যেতে না পারলে পুরো পরিবার উপোস থাকে। সেখানে ৬৫ দিন সাগরে না গিয়ে কীভাবে থাকবো?’

একইরকম হতাশা ব্যক্ত করেছেন ফিসারীঘাটের মাছ ব্যবসায়ী রমজান মিয়া। সাগর থেকে মাছ ধরে তিনি ফিসারীঘাটে এনে বিক্রি করেন।

এদিকে বুধবার থেকেই চট্টগ্রামে জেলেদের চাল বিতরন শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম সোনালী যান্ত্রিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সেক্রেটারি বাবুল সরকার বলেন, ‘চট্টগ্রামে স্থানীয় ও বাইরে মিলে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৭০০ জন জেলে সহায়তা পাবেন। আজ থেকে জেলেদের চা বিতরন করা হচ্ছে। তবে চাল নয়, নগদ অর্থ সহায়তাও তারা চান। কারণ চালের সঙ্গে আরও অনেক কিছু লাগে। সেসব জেলেরা কোথায় পাবে।’

আইএমই/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!