টাকা নিয়েও ‘অ্যানড্রয়েড মোবাইল’ দিল না দেবর—গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্য

শখ ছিল একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন সেটের। সেই শখই তাকে নিয়ে গেল মৃত্যুর কাছে। স্বামী টাকা পাঠানো সত্ত্বেও দেবরের ‘ইচ্ছা’ না হওয়ায় আর কেনা হলো না সেই অ্যানড্রয়েড সেট। মেয়ের পরিবার এটিকে হত্যা বলে দাবি করলেও পুলিশ হত্যা মামলা না নিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার খাজা রোডে জনৈক সারোয়ারের স্ত্রী লিমা (২৫)। স্বামী সা্রোয়ার আট বছর ধরে থাকেন বিদেশে। শশুড়বাড়িতে শ্বশুড়, শাশুড়ি, দেবর, ননদ নিয়ে লিমার সংসার। বিয়ে হয়েছে বছর তিনেক। সংসারে তার ১ বছর ৮ মাসের ছেলে।

স্বামী বিদেশ থেকে টাকা পাঠালে সেই টাকা খরচ করত লিমার দেবর আলাউদ্দিন (২৮)। ঈদের আগে লিমা তার দেবরের কাছে একটা অ্যানড্রয়েড ফোনের আবদার করে। দেবর আলাউদ্দিন কিনে দিবে বলেও তা দেয়নি। ঈদের পর এটি নিয়ে ঝগড়া করে লিমা তার বাবার বাড়িতে চলে আসে।

গত মঙ্গলবার রাতেও এটি নিয়ে দেবরের সাথে লিমার ঝগড়া হয়। পরে বুধবার ভোরের যেকোন সময় লিমা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। মঙ্গলবার (১৮ মে) ভোররাতে খাজা রোড এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লিমা আক্তার ওই এলাকার আবদুল খালেকের মেয়ে।

লিমার বাবা আব্দুল খালেক বলেন, রিমার স্বামী ৮ বছর ধরে বিদেশ থাকে। লিমার সাথে তার বিয়ে হয়েছে ৩ বছর। ঘরে তার ১ বছর ৮ মাসের একটি ছেলে আছে। লিমার স্বামী বিদেশ থেকে টাকা পাঠালে তার সব খরচপাতি করত তার দেবর আলাউদ্দিন। আউদ্দিনের কথায় সংসারে সব কাজ হত।

লিমা একটা অ্যানড্রয়েড ফোন কেনার জন্য দেবরের কাছে আবদার করে। মোবাইল কিনে না দিলে এ নিয়ে দেবরের সাথে ফোনে ঝগড়া হয় লিমার। রাগ করে আমার বাড়িতে চলেও আসে। এখানে এসেও এ বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয় লিমার সাথে। তারপর খেয়ে দেয়ে রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। ভোরে লিমা যে ঘরে শুয়েছিল সে ঘরে গিয়ে দেখি মেয়ে আমার গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছে। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শীলব্রত বড়ুয়া বলেন, মঙ্গলবার রাতে চান্দগাঁও থেকে গলায় ফাঁস দেয়া এক গৃহবধূকে হাসপাতালে আনে স্বজনরা। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রাজেশ বড়ুয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, লিমার বাবা আব্দুল খালেক তার মেয়ের দেবর আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তুলে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন থানায়। আগে মামলা তদন্ত রিপোর্ট আসুক। রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আইএমই/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!