ব্যবসায়ীকে বিকেলে তুলে নিয়ে ছাড়া হল রাতে, আড়াই লাখে রফা

সীতাকুণ্ড থানার ৫ পুলিশের কাণ্ড

বন্ধুর বাবা মারা গেছেন চারদিন আগে। বাসায় চলছিল ফাতেহা অনুষ্ঠান। সেখানে অংশ নিতে যাওয়া এক ব্যবসায়ীকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার সাদা পোশাকের ৫ পুলিশ সিনেমা স্টাইলে টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে গেলেন। পেশায় জাহাজের স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ী তিনি। বিকেলে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে ছাড়া হয় রাত ১০টায়। তার আগে পুলিশকে দিতে হল গুণে গুণে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

সোমবার (২৪ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার জঙ্গল সলিমপুর সিডিএ আবাসিক এলাকায় মনিরের বাড়িতে ঘটনা ঘটেছে। আসামি খোঁজার নামে যার ওপর পুলিশি হামলা হয়, বাবলু (৩৫) নামের সেই ব্যবসায়ী জাহাজের স্ক্র্যাপের ব্যবসা করেন।

জানা গেছে, সোমবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে ব্যবসায়ী বাবলু তার বন্ধু মনিরের মৃত বাবার ফাতেহা অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ সীতাকুণ্ড থানার এসআই ইমরানের নেতৃত্বে পাঁচজন পুলিশ সাদা পোশাকে সেখানে হাজির হয়ে ফাতেহা অনুষ্ঠানে ঢুকে পড়েন। প্রাইভেট কারযোগে আসা অন্যদের মধ্যে অন্তত দুজনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন ইকবাল ও মামুন। এরাসহ মোট পাঁচজন মিলে ব্যবসায়ী বাবলুকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। এ সময় উপস্থিত লোকজন বাবলুর বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্ট আছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশ সেটা এড়িয়ে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

যার বাড়িতে ঘটনা ঘটেছে, সেই মনিরের স্ত্রী ফাতেমা (৩৫) বলেন, ‘হঠাৎ দারোগা ইমরান এসে মনিরকে খুঁজতে থাকে। তাকে না পেয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। কেন মনিরকে খুঁজতে এসেছে জানতে চাইলে তারা জানায় ওয়ারেন্ট আছে। কিন্তু কোনো ওয়ারেন্ট দেখাতে পারেনি। এরপর তারা বাবলুকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়।’

জানা গেছে, থানায় নিয়ে ব্যবসায়ী বাবলুকে নির্যাতন করা হয়। পরে তার পরিবারের কাছ থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। টাকা দেওয়ার পর ওইদিন রাত ১০টার দিকে বাবলুকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।

জেএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!