পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের গায়ে উঠলো হাটহাজারী ইউএনও রুহুল আমিনের ব্লেজার

পৌরসভাটির বাসিন্দা প্রায় ১ লাখ। দোকানপাট, অফিস পাড়া, শিল্পকারখানা মিলে দৈনিক আবর্জনা উৎপাদন হয় ২০ টন। এই ২০ টন আবর্জনা সরাতে কাজ করে ১৭ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। যাদের ঘাম-রক্তমাখা পরিশ্রমে বাস উপযোগী এই পৌরসভা তাদের অনেকেরই টানাপোড়েনের সংসার। এই শীতে তাদের গায়ে ছিল না ভাল মানের গরম কাপড়। তাই তাদের জন্য এবার সেলাই করা হল ব্লেজার। আর সেটি তাদের ডেকে এনে গায়ে পরিয়ে দিলেন পৌর প্রশাসক নিজেই।

পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সম্মানিত করার এমন বিরল নজির স্থাপন হল হাটহাজারী পৌরসভায়। এই পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন।

তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনাকালে আমরা অনেক সম্মুখ যোদ্ধার কথা শুনেছি। যারা বিভিন্নভাবে ভূমিকা রেখেছেন। নিজের কাজটা করে গেছেন অন্যকে ভালো রাখতে। তাদের কথা অনেকেই বলেছেন। গণমাধ্যমেও এসেছে তাদের কথা। আমার দৃষ্টিতে আরও একটা গ্রুপ আছে যারা করোনাকালে নীরবে কাজ করে গেছেন। ভাবেননি আক্রান্ত হবার কথা। কিংবা পরিবার পরিজনদের কথা। যারা একটি দিনের জন্যও কাজ বন্ধ রাখেননি। যারা লক ডাউনে ঘরে বন্দী ছিলেন না। তারা হচ্ছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মী।’
পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের গায়ে উঠলো হাটহাজারী ইউএনও রুহুল আমিনের ব্লেজার 1
রুহুল আমন বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতা কর্মী শব্দ দ্বারা ঠিক বুঝানো যাবে না তাদের কাজের মাত্রা। সহজ করে বললে যারা ডাস্টবিনের দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পরিষ্কার করে শহরকে বসবাস উপযোগী রাখেন তারাই পরিচ্ছন্নতা কর্মী। বৈশ্বিক মহামারীর কালে হাটহাজারী পৌরসভার ডাস্টবিনের ময়লা পরিষ্কার করে পৌরসভাকে পরিচ্ছন্ন রেখেছেন ১৭ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। করোনাকালে যারা নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে গেছেন। প্রতিদিন চারটা গাড়িতে করে গড়ে প্রায় ২০ টন দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা সংগ্রহ করে ময়লার ভাগাড়ে ফেলেছেন তারা। এদের জন্য কিছু করার সুযোগ হচ্ছিল না। এই শীতে তাদের অনেকেরই নাই ভালো একটা সোয়েটার। আজ ১৭ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে একটা করে ব্লেজার গায়ে তুলে দিলাম। আমাদের কাজের মতই তাদের কাজ সম্মানের এবং গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাদের প্রত্যেককে টেইলার্সে নিয়ে গিয়ে ব্লেজারের মাপ নেওয়া হয়। তাদের মন মত রঙের ব্লেজারই সেলাই করা হয়।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!