ঢাকায় গিয়ে এস আলম পরিবারে এল স্বস্তি, সরলো অক্সিজেন সাপোর্ট

সিঙ্গাপুর থেকে মনিটরিংয়ে শিল্পপতি মাসুদ

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এস আলম পরিবারের সদস্যদের সবারই অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত সাত সদস্যই চিকিৎসা নিচ্ছেন ঢাকার ধানমণ্ডিতে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডে। বাকি এক সদস্য রয়েছেন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। শনিবার (২৩ মে) ও রোববার তারা সবাই চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে যান।

সোমবার (২৫ মে) রাত নয়টায় ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র একথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সোমবার সকালেই চিকিৎসাধীন সবারই অক্সিজেন সাপোর্ট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত প্রতিটি সদস্যই খাবারদাবারও করছেন স্বাভাবিকভাবেই। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের কোনো বিধিনিষেধ নেই জানিয়ে পারিবারিক ওই সূত্র জানিয়েছেন, নিয়মিত ওষুধের পাশাপাশি তারা শুধু গরম পানি খাচ্ছেন ও তার ভাপ নিচ্ছেন। এছাড়া চিকিৎসকরা প্রত্যেককেই টেনশনমুক্ত বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন।

গত এক সপ্তাহে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের পরিবারের মোট আটজন সদস্য চট্টগ্রাম নগরীর সুগন্ধার বাসায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে মারা যান বড় ভাই মোরশেদুল আলম। সাইফুল আলম মাসুদ বর্তমানে তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। পরিবারে করোনা হানা দেওয়ার পর থেকেই তিনি সেখান থেকে তার পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার বিষয়টি মনিটর করে যাচ্ছেন বলে পারিবারিক সূত্রটি জানিয়েছে। তার পক্ষে চিকিৎসার পুরো বিষয়টি সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন ইউনাইটেড হাসপাতালের কার্ডিওলজি ব্ভিাগের চিকিৎসক ডা. তানভীর আহমেদ। সম্পর্কে তিনি সাইফুল আলম মাসুদের ভাগ্নে।

১৭ মে সাইফুল আলম মাসুদের পরিবারের ৬ সদস্য করোনা পজিটিভ রোগী হিসেবে শনাক্ত হন। এর মধ্যে শুক্রবার (২২ মে) রাত ১০টা ৫০ মিনিটে এস আলম পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং শিল্পপতি সাইফুল আলম মাসুদের বড় ভাই মোরশেদুল আলম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডে মারা গেছেন। সাইফুল আলম মাসুদের অন্য যে চার ভাই করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন তারা হলেন এস আলম গ্রুপের পরিচালক ৬০ বছর বয়সী রাশেদুল আলম, এস আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ৫৩ বছর বয়সী আবদুস সামাদ লাবু, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এস আলম গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল আলম এবং এস আলম গ্রুপের পরিচালক ৪৫ বছর বয়সী ওসমান গণি। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হন ওই পরিবারের ৩৬ বছর বয়সী এক নারীও— তিনি ওসমান গণির স্ত্রী।

এরপর ২৩ মে পাঁচ ভাইয়ের পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন সাইফুল আলম মাসুদের মা ৮৫ বছর বয়সী চেমন আরা বেগম এবং ২৬ বছর বয়সী ছেলে আহসানুল আলম মারুফও।

পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছেন, মূলত এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের আগ্রহেই করোনায় আক্রান্ত তার মা ও বড় ছেলেকে শনিবার (২৩ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর সুগন্ধা আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডের বাসা থেকে সরিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে আরও ছিলেন আহসানুল আলম মারুফের স্ত্রী ও চার মাস বয়সী সন্তান।

এরপর রোববার (২৪ মে) সকাল আটটায় করোনায় শয্যাশায়ী অপর চার ভাই ও এক ভাইয়ের স্ত্রীকে আইসিইউযুক্ত অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ১১টাতেই তারা ঢাকা পৌঁছে যান। এর পরপরই তাদের পাঁচজনকে ভর্তি করা হয় ঢাকার ধানমণ্ডিতে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডে। এর আগে শনিবারই সেখানকার আইসিইউ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় মা ও ছেলেকে। ওই হাসপাতালে এসে তাদের চিকিৎসার পুরো বিষয়টি সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন ইউনাইটেড হাসপাতালের কার্ডিওলজি ব্ভিাগের চিকিৎসক ডা. তানভীর আহমেদ। সম্পর্কে তিনি সাইফুল আলম মাসুদের ভাগ্নে।

তবে পারিবারিক একটি সূত্র জানিয়েছেন, আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে আইসিইউ সিটের সংকটের কারণে আবদুস সামাদ লাবুকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!