ডলু নদীর বুকে ভ্যানভর্তি ময়লা ছুঁড়ে মারে সাতকানিয়া পৌরসভা, দূষণে বিপর্যস্ত পরিবেশ (ভিডিওসহ)

দখল ও দূষণে চট্টগ্রাম অঞ্চলের অন্যতম প্রধান নদী সাতকানিয়ার ডলু নদী স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে অনেক আগেই। নির্বিচার দখলের কবলে পড়ে বর্তমানে এই ডলু নদী অনেকটাই মরা খালে পরিণত হয়েছে। এখন সেই নদীতে দূষণের নতুন মাত্রা যোগ করেছে খোদ সাতকানিয়া পৌরসভা। সেখানকার কর্তৃপক্ষ পুরো পৌরসভার বিপুল পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছে ডলু নদীকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতকানিয়া পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিনই ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে ডলু নদীতে। এভাবে বিপুল পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে একদিকে নদীর মাঝ বরাবর পানিপ্রবাহে তৈরি হচ্ছে বাধা, অন্যদিকে দূষণে বিপর্যস্ত হচ্ছে নদী। পৌরসভার বর্জ্যে ভরাট হয়ে ডলু নদীর এখন এমনই অবস্থা যে, জোয়ার-ভাটা তো দূরের কথা, ভরা বর্ষায় হাঁটু পানিও দেখা যায় না। বন্যার পানি ডলু নদী উপচে পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের রাস্তাগুলো বিলীন হয়ে যায়।

সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে প্রচারিত একাধিক ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, সাতকানিয়া পৌরসভার ভোয়ালিয়া পাড়া, ছমদর পাড়া, সামিয়ার পাড়া ও ঘাটিয়ার পাড়া ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে ময়লা-আবর্জনা এনে ডলু নদীতে ফেলে দিচ্ছেন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

জানা গেছে, সাতকানিয়া পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যানে করে ময়লা-আবর্জনা এনে কখনও ভোর, আবার কখনও দুপুর-বিকেলেও ডলু নদীতে ফেলেন।

স্থানীয়রা জানান, আগে সাতকানিয়া পৌরসভার ডাকবাংলোর পার্শ্ববর্তী কলেজ রোডের একটি জমিতে ময়লা-আবর্জনা জমা করা হতো। পরে সেই জায়গাটিতে অস্থায়ী মার্কেট ও ভাড়াঘর তৈরির পর ডলু ব্রিজের পূর্বপাশের একটি জায়গায় ময়লা ফেলা শুরু হয়। কিন্তু পরে ওই জায়গায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স তৈরির পর সেখানেও ময়লা ফেলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে ভ্যানে করে ময়লা এনে ডলুব্রিজের ওপর থেকে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে সরাসরি নদীতে। স্থানীয় অনেকে এর প্রতিবাদ করে এলেও পৌর কর্তৃপক্ষ তাতে গা করেনি।

এদিকে সাতকানিয়া পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম দাবি করেছেন, ‘পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ময়লা ফেলার জায়গা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। তাই ডলু নদীতে ময়লা ফেলার কথা না। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের প্রতিও নিষেধ রয়েছে। ’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!