কল্যাণ পার্টির পাশে চকরিয়া-পেকুয়ার আওয়ামী লীগ

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে এবার নির্বাচন করতে পারছেন না আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। ঋণখেলাপি হওয়ায় তিনি নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়েন। তাই এই আসনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকেই সমর্থন দিচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাকে জিতিয়ে আনার জন্য কাজ করতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজের হল রুমে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে সমর্থনের ঘোষণা দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করা হয়েছিল সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপিকে। কিন্তু তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় এখানে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নেই। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা হচ্ছে, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে সমর্থন দিতে হবে। আমি চকরিয়া উপজেলা, চকরিয়া পৌরসভা, পেকুয়া উপজেলা এবং মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দলের নির্দেশনার কথা জানাতে এসেছি।’

ইবরাহিমের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমরা আজ থেকে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের জন্য কাজ করব। তাকে জিতিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ও হাতঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আজ বেশি কথা বলব না। তবে নিরাপদ চকরিয়া-পেকুয়া গড়তে আমার সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এজন্য হাতঘড়ি মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে জয়ী করতে হবে।’

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, চকরিয়া পৌসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, সাবেক সদস্য এ টি এম জিয়া উদ্দিন চৌধুরী জিয়া, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য এসএম গিয়াস উদ্দিন, আমিনুর রশিদ দুলাল, মিজানুর রহমান, জি এম আবুল কাশেম, পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক।

আরও বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক এ কে এম গিয়াসউদ্দিন, চিরিংগা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরে হোছাইন আরিফ, বমুবিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুরুল কাদের, বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলম, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ও চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন মানিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী।

তবে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ সভায় চকরিয়া উপজেলা, চকরিয়া পৌরসভা, পেকুয়া উপজেলা ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদকদের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তারা সবাই বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। জাফর আলমের পক্ষে বিভিন্ন নির্বাচনী সভা-সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন তারা।

কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপি। ঋণখেলাপি হওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল হয়। আসনটিতে বর্তমানে সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন জাফর আলম। তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তার প্রতীক ট্রাক। তবে তার ছেলে তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী তুহিনও ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ‘অশোভন’ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে গত বুধবার সংসদ সদস্য জাফর আলমকে সাময়িক অব্যাহতি এবং শোকজ করে জেলা আওয়ামী লীগ। আগামী সাতদিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!