করোনায় মানুষ মারা যাচ্ছে বেশি পাহাড়তলী হালিশহর কোতোয়ালীতে

পিছিয়ে নেই খুলশী ও আকবরশাহ

চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তের দুই মাস চার দিনের মাথায় এখন করোনা রোগীর সংখ্যা প্রায় চার হাজার পেরিয়ে গেছে। ৬ জুন পর্যন্ত শুধু মহানগরীতেই রয়েছে দুই হাজার ৮৭৪ জন করোনা রোগী। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৭৩ শতাংশই নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। বাকি ২৭ শতাংশ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার। যেসব এলাকায় সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে সেসব এলাকাকে রেড জোনের তালিকায় রাখা হয়েছে। রেড জোনের তালিকায় থাকা এলাকাতেই বাড়ছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা।

চট্টগ্রামের ১৬ থানার মধ্যে ১২ থানাই রেড জোনের তালিকায়। নগরীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে কোতোয়ালী থানা এলাকায়। আর সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে পাহাড়তলী এলাকায়। হালিশহর এলাকা রয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর তালিকায়। তার পরের অবস্থানে রয়েছে কোতোয়ালী এলাকা। রেড জোনের তালিকায় থাকা খুলশী, আকবরশাহ এলাকায়ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগরীর ৩৩ এলাকায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রেড জোনের পরিসংখ্যানের তালিকায় থাকা এলাকাতেই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ৬ জুন পর্যন্ত মারা যাওয়া ৯৭ জনের মধ্যে মহানগরীর ৭৮ জন এবং উপজেলার ১৯ জন— যা মোট আক্রান্তের ৩ শতাংশ।

কোন্ এলাকায় কতজন করোনা রোগী মারা গেছেন
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ এপ্রিল চট্টগ্রামে সাতকানিয়া উপজেলায় প্রথম করোনা পজিটিভ রোগী মারা যান। মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে বাড়তে তা এখন ১০০ ছুঁই ছুঁই। ৬ জুন পর্যন্ত মারা যাওয়া ৯৭ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক মারা গিয়েছেন পাহাড়তলী এলাকায়। সেখানে ৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা যান। এর পরের অবস্থানে হালিশহর এলাকা। সেখানে এ পর্যন্ত ৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। খুলশী ও আকবরশাহ এলাকায় এ পর্যন্ত ৫ জন করে ১০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। এর বাইরে দুজন চকবাজারের বাসিন্দা, বন্দর এলাকার দুজন, ডবলমুরিং এলাকার তিনজন রোগী, বাকলিয়া এলাকার দুইজন, বায়েজিদ এলাকার একজন, পতেঙ্গায় একজন, সুগন্ধা আবাসিক এলাকায় একজন ও মোহরা এলাকার দুইজন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা যান। এছাড়া নগরীর লালখানবাজার এলাকায় একজন, মাদারবাড়ি এলাকায় দুইজন, কদমতলী এলাকায় একজন, আগ্রাবাদ এলাকায় দুইজন, চান্দগাঁও এলাকায় একজন, বহদ্দারহাট এলাকায় একজন, পাঁচলাইশ এলাকায় তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় দামপাড়া এলাকায়। এই এলাকায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন চারজন করোনা আক্রান্ত রোগী। করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও মারা গেছেন ঈদগাঁ এলাকায় তিনজন, এনায়েত বাজার এলাকায় একজন, বউ বাজার এলাকায় একজন, ইপিজেড এলাকায় একজন, রাহাত্তারপুলে একজন, সদরঘাট এলাকায় দুইজন, মোগলটুলীতে একজন এবং মোহাম্মদপুর এলাকায় একজন।

এর বাইরে লেভেল পার্কের একজন, পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন, মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক, চমেক হাসপাতালের একজন চিকিৎসক, জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্স করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

কোন উপজেলায় কতজন মারা গেছেন
এ পর্যন্ত উপজেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন লোহাগাড়ার তিনজন, পটিয়া উপজেলার তিনজন এবং সীতাকুণ্ডের তিনজন, রাঙ্গুনিয়ার দুইজন ও হাটহাজারীর দুইজন। বাকি ছয়জনের মধ্যে একজন করে রয়েছেন সাতকানিয়া, বাঁশখালী, ফটিকছড়ি, আনোয়ারা, বোয়ালখালী এবং সন্দ্বীপের বাসিন্দা।

তবে মৃত এ ৯৭ জনের মধ্যে ৩৭ জনই ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি এবং ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছে ২৮ জন। বাকিরা বিভিন্ন বয়সের।

এসআর/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!