কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পদের জন্য দৌড়ঝাঁপ

আগস্টে শেষ হচ্ছে মেয়াদ

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগষ্টের মাঝামাঝি। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দেওয়া হবে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ। তাই নতুন চেয়ারম্যান কে হচ্ছেন এই নিয়ে চলছে আলোচনা। চলছে জোর লবিং।

টানা দুইবার কউক চেয়ারম্যান হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ফোরকান আহমেদ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তবে তাকে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না বলে একাধিক মাধ্যমে জানা গেছে। তাই কউক চেয়ারম্যান পদে নতুন মুখ আসার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত।

এদিকে, চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে সর্বত্র চলছে আলোচনা। বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছে কয়েকজনের নামও। এদের মধ্যেই নতুন চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেতে পারেন এমনটাই শোনা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে জোর লবিংও শুরু করেছেন কেউ কেউ।

তবে কউক চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা। তার মত ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ এ সময়ে বিরল। দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। জেলা পর্যায়ে ক্ষমতাসীন দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকেও ক্ষমতার অপব্যবহার বা প্রভাব বিস্তারের বিন্দু পরিমাণ অভিযোগ নেই তার বিরুদ্ধে। তার সততা ও স্বচ্ছতার বিষয়টিও কউক চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়ার দৌড়ে তাকে এগিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুডবুকে শীর্ষে আছেন জেলার অভিজ্ঞ এ রাজনীতিবিদ।

অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা জানান, এখানে তদবির কিংবা আবেদন করার কিছুই নেই। কক্সবাজারের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী যাকেই এই পদে বসাবেন তাকে নিয়েই আমরা এগিয়ে যাবো।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পদের জন্য দৌড়ঝাঁপ 1
এছাড়া, কউক চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়ার আলোচনায় রয়েছে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া। ওয়ান ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।

উচ্চশিক্ষিত ও সৃজনশীল রাজনীতিবিদ হিসেবে কউক চেয়ারম্যান পদে প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া আসার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতি করে আসা দলের এই ত্যাগী নেতাকে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা মূল্যায়ন করবেন বলে আশা করছেন অনেকে।

জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমেদ বাহাদুর নিয়োগ পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে ছাত্র রাজনীতি করে আসা ক্লিন ইমেজের বাহাদুরের কউক চেয়ারম্যান হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই সোহেল আহমেদ বাহাদুরকে কউক চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর বলেন, শুভাকাঙ্খিরা বিভিন্ন পর্যায় থেকে চাপ দিচ্ছে তদবিরের জন্য। তবে আমি উখিয়া-টেকনাফের রাজনীতি নিয়ে থাকতে চাই। এরপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটাই মেনে নেব।

এদিকে, নতুন কউক চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়ার দৌড়ে সাবেক জেলা যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও কক্সবাজারের বিশিষ্ট সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেলও এগিয়ে আছেন।

তবে অনেকের দাবি তৃতীয় মেয়াদেও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ফোরকান আহমেদ নিয়োগ পেতে পারেন। এজন্য তিনি পুনরায় নিয়োগ পেতে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে এ ব্যাপারে জানতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বর্তমান চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদের মুঠোফোনে চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সাধারণ মানুষের দাবি, বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহর করতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা অনেক বেশি। তাই কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হতে হবে সৃষ্টিশীল ও আধুনিক। কারণ কউকই পারে কক্সবাজারকে দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজাতে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে কক্সবাজারকে আধুনিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়। আর তা বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদে ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিল-২০১৬’ পাস হয়েছে।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!