অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা

টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই

রূপকথার গল্পের মতো ফাইনালেও বাজিমাত করে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশের মেয়েরা। রূপকথারও শেষ আছে। একটা সময় গল্প ফুরোয়। কিন্তু বাংলাদেশের মেয়েদের সাফল্য গাঁথা যেন ফুরোবার নয়। ২০২০ আইসিসি টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে রীতিমতো অজেয় সালমা খাতুনের দল। শনিবার ফাইনাল ম্যাচে থাইল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ।

স্কটল্যান্ডের ডান্ডিতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ৭০ রানের বড় ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বাছাই পর্বের ফাইনালে টস ভাগ্য ছিল বাংলাদেশের মেয়েদের পক্ষে। তারা প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে করে ১৩০ রান। জবাব দিতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে থাইল্যান্ডের মেয়েরা তুলে ৬০ রান। হারলেও সালমাদের সঙ্গে থাইল্যান্ডের মেয়েরাও বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।

ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে ৬৮ রান তোলেন সানজিদা ইসলাম এবং মুর্শিদা খাতুন। ১১তম ওভারের প্রথম বলে মুর্শিদা ৩৪ বলে চারটি চারের সাহায্যে ৩৩ রান করে বিদায় নেন। আরেক ওপেনার সানজিদা খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। ৬০ বলে ৬টি চার আর তিনটি ছক্কায় করেন অপরাজিত ৭১ রান। তিন নম্বরে নামা উইকেটরক্ষক ব্যাটার নিগার সুলতানা ৮ রান করে বিদায় নেন। শেষ দিকে আর কেউ তেমন রান করতে পারেননি। শায়লা শারমিন ৩, জাহানারা আলম ৩, ফাহিমা খাতুন ০, ফারজানা হক ২* রান করেন।

১৩১ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগ্রেসদের বোলিং তোপে পড়ে থাই মেয়েরা। শুরু থেকেই উইকেট খোয়াতে শুরু করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমি এবং ফাইনালে ওঠা থাইল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১ রান করেন লেনপ্রাসার্ট। আর কেউ দুই অঙ্কে যেতে পারেননি।

জাহানারা ২ ওভারে ৩ রান দিয়ে উইকেট পাননি। নাহিদা ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন। রিতু মনি ২ ওভারে ৮ রান দিয়ে উইকেট পাননি। সালমা ৪ ওভারে ৪ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। খাদিজা ৩ ওভারে ৮ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। ফাহিমা ২ ওভারে ৭ রান দিয়ে উইকেট পাননি। ৩ ওভারে ৯ রান দিয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন শায়লা শারমিন।

এর আগে বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ছিল পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে, যদিও ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরে রিজার্ভ ডে’তে গড়িয়েছিল। নিজেদের প্রথম ম্যাচের আগেই টাইগ্রেসদের তাই নামতে হয় দ্বিতীয় ম্যাচে। যেখানে সালমা খাতুনের দলটি যুক্তরাষ্ট্রকে উড়িয়ে দেয়। আগে ব্যাট করা যুক্তরাষ্ট্র ৪৬ রানে অলআউট হয়। বাংলাদেশের সুযোগ ছিল বিনা উইকেটে জেতার। জয়ের কাছে থাকাকালীন দুটি উইকেট হারালেও টাইগাররা ৮.২ ওভারে জয় তুলে নেয়।

পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশ জিতেছিল ৬ রানে। আগে ব্যাট করে লাল-সবুজরা ১৬.৩ ওভারে তোলে ৮ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান। বৃষ্টির কারণে আর ব্যাটিংয়ে নামা না হলে পাপুয়া নিউগিনির লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮ ওভারে ৫৯। দলটি ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ৫২ রান। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ বৃষ্টি আইনে জেতে ১৩ রানে। স্বাগতিক স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ১৭ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ১০৪ রান। বৃষ্টিতে ইনিংস না বাড়লে স্বাগতিকদের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ৮ ওভারে ৬৩। ৬ উইকেটে ৪৯ রান করলে স্কটিশদের ইনিংস থেমে যায়।

সেমিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আইরিশ মেয়েরা ২০ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে করে ৮৫ রান। জবাবে, বাংলাদেশ ৯ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয়। ১৮.৩ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তোলে ৮৬ রান।

গতবার বাছাই পর্বেও চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এ নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবে মেয়েরা। ২০১৪ সালে স্বাগতিক হিসেবে প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলে তারা। এরপর ২০১৬ ও ২০১৮ আসরে বাছাইপর্ব পেরিয়ে পেয়েছে আসল লড়াইয়ে খেলার সুযোগ। এমন সাফল্যে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার দাবিটা জোরালো করল টাইগ্রেসরা

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!