২১ বছরেও সংস্কার নেই, চলাচলে ভোগান্তি পেকুয়ার ১৫ হাজার মানুষের
দীর্ঘ ২১ বছর ধরে সংস্কার হচ্ছে না কক্সবাজারের পেকুয়ার দরবার সড়ক। সড়কটি সংস্কার না হওয়ার ফলে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের অন্তত ১৫ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। ১৯৯৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ওই সড়কটি উন্নয়ন সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করে। সড়কটি সবুজবাজার থেকে ছড়িপাড়া হয়ে পশ্চিম বকশিয়াঘোনা কুতুবদিয়া চ্যানেল সংশ্লিষ্ট বেড়িবাঁধে মিশেছে। ১৯৯৬ সনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। পরে ১৯৯৮ সালে হযরত মালেক শাহ (রা.) দরবার শরীফের নামে সড়কটি সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করে। সে সময় সড়কটি ব্রিক সলিনের আওতায় উন্নয়ন হয়। পরবর্তীতে কালের পরিক্রমায় জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রয়েছে। বর্তমানে সড়কটি ক্ষতবিক্ষত। বিছানো ইট ভেঙে সরে গেছে অনেক আগেই। এখন মাটিও সরে যাচ্ছে। বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচলও। জরুরি প্রয়োজন না হলে, এ সড়কে গাড়ি আনেন না চালকরা। ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। এ করুণ দশা পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের দরবার সড়কের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নাজুক সড়কটিতে হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ছেন অনেকেই। এছাড়া সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের কিছু অংশ ডুবে থাকে পানিতে। তাই কাঁদাপানি মাড়িয়ে চলাচল করছে মানুষজন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দরবার সড়ক দিয়ে রাজাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ পশ্চিমাংশের বকশিয়াঘোনা, নতুনঘোনা, নতুনপাড়া, দক্ষিণ সুন্দরীপাড়া, বদিউদ্দিনপাড়া ও চঁরিপাড়া এলাকার ১৫ হাজার মানুষ চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় দিনদিন নাজুক হয়ে পড়েছে সড়কটি। এখন তো হাঁটাও দায় হয়ে পড়েছে। যান চলাচল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের যাতায়ত, অসুস্থ রোগী পরিবহন, লবণ ও চিংড়ি পরিবহনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
রাজাখালী ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবে প্রতিবছর শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটি সংস্কার করে রিক্সা চলাচলের উপযোগী করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় সড়কটি ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পর থেকে খুব ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে।
রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূর বলেন, ‘একটু বৃষ্টি হলেই সড়কটি পানিতে ডুবে যায়। তখন নৌকা নিয়ে চলাচল করতে হয়। এখন সড়কের দুই পাশের মাটি পাশের লবণ মাঠে ও চিংড়িঘেরে ধসে পড়ছে। এতে সড়কের ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এলাকাবাসীর চলাচলের দুর্ভোগের বিষয় বিবেচনায় সড়কটি সংস্কারের জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিয়েছি। স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও এলজিইডি অফিসে অনেকবার লিখিত আবেদন দিয়েছে। কিন্তু সড়কটি সংস্কারে কেউ এগিয়ে আসেনি। দীর্ঘদিন সংস্কার বঞ্চিত থাকায় সড়কটি নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। তাই তিন কিলোমিটারের এ সড়কটি সংস্কারে বড় বরাদ্ধ প্রয়োজন।’
পেকুয়া উপজেলার প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘দরবার সড়ক সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার প্রকল্পে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই বরাদ্ধ আসতে পারে। বরাদ্ধ পেলে দরবার সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হবে।’
এএইচ