১৮ হাজার কোটি টাকায় দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর পেল চূড়ান্ত অনুমোদন

১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রকল্প সরকারের অনুমোদন পেল চূড়ান্তভাবে। এই প্রকল্পের অধীনে সংযোগ সড়কসহ গভীর সমুদ্র বন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দীর্ঘ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এর ফলে বিশাল জাহাজ থেকে সরাসরি পণ্য ওঠানামা সহজ হবে।

পানির গভীরতা বেশি না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না। সেগুলো নোঙর করে থাকে মাঝ সমুদ্রে। কিন্তু মাতারবাড়িতে সাগর ১৬ মিটার গভীর হওয়ায় সেখানে ৮ হাজার টিইইউএস কনটেইনারবাহী ১৬ মিটার ড্রাফটের মাদার ভেসেল ভেড়ার সুযোগ তৈরি হবে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর থেকে চাপ কমবে এবং দেশের কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে ২০২৬ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে। এর ডিজাইন ও লে-আউটসহ সব নকশা জাপানি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে করা হচ্ছে। প্রকল্পের ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি কোটি ১৬ লাখ টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে ঋণ সহযোগিতা হিসেবে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা দিচ্ছে জাপান। অন্যদিকে সরকার ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা যোগান দেবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘দেশে যে কয়টি সমুদ্র বন্দর রয়েছে, তার কোনোটিই গভীর সমুদ্র বন্দর নয়। ফলে ডিপ ড্রাফটের ভেসেল— এসব বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারে না। ডিপ ড্রাফট ভেসেলের জেটি সুবিধা নিশ্চিত করতেই মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে।’

মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণ শীর্ষক এই প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়, পানির গভীরতা বেশি না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে মাদার ভেসেলগুলো (বিশাল জাহাজ) ভিড়তে পারে না। সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ দুই হাজার টিইইউএস কনটেইনার নিয়ে বন্দরে ভিড়তে পারে। এখন পণ্যবাহী মাদার ভেসেলগুলোর মাঝ সমুদ্রে নোঙর করে। সেখান থেকে ফিডার জাহাজে করে কনটেইনার বন্দরে আনা হয়। এভাবে প্রতিদিন তিন হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার ৮০০ টিইইউএস কনটেইনার আমদানি পণ্য খালাস হয়ে থাকে। এর ফলে অনেক সময় ও অর্থের অপচয় হয়।

মঙ্গলবারের একনেক সভায় ২৪ হাজার ১১৩ কোটি টাকায় মোট নয়টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে আরও রয়েছে ১২৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!