১০ পেশার লোক প্রথম পাবে করোনার টিকা, তালিকা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাতে

বাংলাদেশে ১০ পেশার লোক করোনাভাইরাসের টিকা পাবে সবার আগে। করোনাভাইরাসের টিকার ব্যবস্থাপনা নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্স ইতিমধ্যে ১০টি পেশার একটি তালিকা তৈরি করেছে। এই তালিকা চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে বাংলাদেশের কেনা তিন কোটি করোনার টিকা প্রথম দফায় পাবে তারাই। রোববার (১৩ ডিসেম্বর) এই তালিকা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানাচ্ছে, করোনার টিকা যারা পাব্নে, তাদের একটি ডাটাবেস তৈরি করা হবে। প্রত্যেক প্রাপককে দুই ডোজ টিকা নিতে হবে। দ্বিতীয় ডোজটি নিতে হবে প্রথমটির ২৮ দিন পরে।

করোনাভাইরাসের টিকার ব্যবস্থাপনা নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব ড. শামসুল হক জানাচ্ছেন, ‘কিভাবে এবং কোথায় টিকাগুলো মজুদ করা হবে সে বিষয়ে আমরা প্রস্তুতি শেষ করেছি। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের দেওয়া প্রথম ৫০ লাখ টিকা ডোজ স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মত ফ্রন্টলাইনারদের দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ৪৫ লাখ সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাত লাখ বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মী এই টিকা পাবেন।

বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মীসহ আরও ১৫ লাখ স্বাস্থ্যকর্মী প্রাথমিক পর্যায়ে এই ডোজ পাবেন। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে ৫৫ লাখ বাংলাদেশ পুলিশ কর্মী টিকা পাবেন।

করোনার এই টিকা ২ লাখ ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার মধ্যেও বিতরণ করা হবে।

অন্য যেসব পেশাজীবীকে অগ্রাধিকার হিসেবে এই টিকা দেওয়া হবে, তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তিন লাখ ফ্রন্টলাইনার, ৫০ হাজার সাংবাদিক এবং ৫ হাজার সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসক এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এছাড়া সংসদ সদস্যসহ ৭০ হাজার জনপ্রতিনিধি এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য পাবেন করোনার টিকা।

ষাটোর্ধ বয়সীদের জন্য করোনার টিকা খুবই জরুরি। এদের মধ্যে রয়েছেন বৃদ্ধনিবাসে থাকা বয়স্ক ব্যক্তি ও ধর্মীয় নেতারা।

করোনা টিকা পাওয়ার ওপর ভিত্তি করে আরও যেসব ব্যক্তির মাঝে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা দেওয়া হতে পারে, তাদের মধ্যে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারানো ব্যক্তি, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক, শিক্ষাকর্মী এবং গণপরিবহনকর্মীরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানাচ্ছে, ইপিআই-এর ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনার এই টিকাদান কর্মসূচি পালন করবে। টিকার ডোজগুলো ৬৪টি জেলা জুড়ে ইপিআই-এর কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্টে সংরক্ষণ করা হবে। এগুলো সংরক্ষণ করতে হবে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়।

এর আগে গত ৫ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনার টিকা আমদানির জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে। প্রায় তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার কথা চূড়ান্ত করেছে সরকার। এই টিকা পাবে দেড় কোটি মানুষ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৯%। প্রথম পর্যায়ে ভারতের সেরাম প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে টিকা সরবরাহ করবে বাংলাদেশকে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!