রেলে চাকরি দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা ‘ঘুষ’ নিয়ে ঘোরাচ্ছেন রেল কর্মচারী

ওয়েম্যানের চাকরির জন্য চুক্তি হয়েছিল ৬ লাখ টাকার

নিজের ভাইকে রেলওয়েতে চাকরি দিতে ছয় লাখ টাকা ঘুষ দিতে চুক্তি হয় সদ্য অবসরকালীন ছুটিতে যাওয়া রেল কর্মচারী ফয়েজ আহমেদ ও জাকির হোসেন। এ চুক্তি অনুযায়ী কথিত ‘চাকরিদাতা’ ফয়েজ রেলওয়ের সাবেক প্লাটফর্ম ইন্সপেক্টর। আর ভাইয়ের চাকরির জন্য ঘুষ হিসেবে টাকা দিয়েছিলেন জাকির হোসেন। চাকরির খরচ বাবদ চার লাখ টাকা অগ্রিমও নিয়েছিলেন ফয়েজ।

কিন্তু চাকরি তিনি দিতে পারেননি জাকিরের ভাইকে। আবার চাকরির নামে নেওয়া টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না জাকিরকে। ঘুষের টাকা না পেয়ে এর বিচার চাইতে জাকির হোসেন গেলেন রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।

গত ৭ ডিসেম্বর এ বিষয়টি উল্লেখ করে খুলশী থানার ওয়্যারলেস কলোনি এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিযুক্ত ফয়েজ আহমেদের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে জাকির হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার ভাই মোশাররফ হোসেনকে ওয়েম্যান পদে চাকরি দেবে বলে ছয় লাখ চায় ফয়েজ আহমেদ। চার লাখ টাকা অগ্রিম নেয় সে। কিন্তু চাকরি না হওয়ায় টাকাগুলো ফেরত চাইলে সে আর দিচ্ছে না। এ ঘটনায় আমি অভিযোগ দিয়েছি। প্রয়োজনে আদালতে যাব।’

জানা গেছে, ফয়েজ আহমেদ রেলওয়ের সাবেক প্লাটফর্ম ইন্সপেক্টর। তিনি ডিসিও অফিসের অধীনে বেডিং ইনচার্জ পদেও চাকরি করতেন। ফয়েজ আহমেদ রেল শ্রমিক লীগ নেতা সিরাজ গ্রুপের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে অবসরকালীন ছুটিতে (এলপিআর) থাকা ফয়েজের বিরুদ্ধে জাকির হোসেন ছাড়াও রেলওয়েতে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

জাকিস হোসেন জানান, ২০১৮ সালে ১ হাজার ১১৩ জন ওয়েম্যান নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ সময় তার ভাই মোশাররফ হোসেনের চাকরির জন্য ফয়েজ আহমেদের সাথে ছয় লাখ টাকার চুক্তি হয়। এ চুক্তি অনুযায়ী ফয়েজকে তিনি ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট নগদ চার লাখ টাকা দেন। বাকি দুই লাখ টাকা চাকরি হওয়ার পর দেওয়ার কথা।

চাকরি দিতে না পারায় ফয়েজ আহমেদের কাছ থেকে টাকা ফেরত চান জাকির হোসেন। ফয়েজ ৯০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও বাকি ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা দেননি। বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামের দ্বারস্থও হন জাকির। কিন্তু তার টাকা আর ফেরত আসেনি।

চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার বিষয়টি চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে স্বীকার করে অভিযুক্ত রেল কর্মচারী ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘জাকির সামান্য টাকা পাবে আমার কাছ থেকে। আমি তা দিয়ে দেবো।’

জেএস/এমএফও/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!