হালদায় ডলফিন হত্যা বন্ধে দেশের ভার্চুয়াল আদালতে প্রথম রিট

চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধে কার্যকর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম এ রিট দায়ের করেন। দেশে চালু হওয়া ভার্চুয়াল কোর্টে এটিই প্রথম রিট।

সোমবার (১১ মে) জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করা হয়েছে গণমাধ্যমকে জানান ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চুয়াল কোর্টে রিট শুনানির জন্য করা এই আবেদনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ সচিব, স্থানীয় নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনে দেশে কার্পজাতীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র হালদায় নির্বিচারে ডলফিন হত্যা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। পাশাপাশি ডলফিন হত্যা বন্ধে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারিরও আবেদন করা হয়।

ব্যারিস্টার আবদুল কাইয়ুম লিটন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে মুঠোফোনে বলেন, ‘হালদার ডলফিন এখন বিপন্ন প্রানী। এটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। হালদায় ড্রেজারের আঘাতসহ বিভিন্ন কারণে ডলফিনের মৃত্যু হচ্ছে। হালদায় ডলফিন হত্যা বন্ধ করা উচিত। লকডাউনের সময়েও হালদায় ডলফিন হত্যা আমাকে ব্যতিত করে তুলে। তাই আমি স্বপ্রণোদিত হয়ে রিট করেছি। কোর্ট খোলার পর এটি নিয়ে বিস্তারিত কাজ করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘বন্যপ্রাণী আইন ২০১২ অনুযায়ী নির্বিচারে কোনো প্রাণী হত্যা করা যাবে না। এটা অপরাধ। কিছু অসাধু লোক নিষ্ঠুরভাবে এসব নিরীহ প্রাণীদের হত্যা করেছে। নিয়ম অনুযায়ী আদালত এই রিট আবেদনের শুনানির জন্য তারিখ ঠিক করবেন। নির্ধারিত তারিখে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’

এর আগে গত ৮ মে দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ‘খুন’ হয়েছে ২৪ তম ডলফিন। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের জিয়া বাজার এলাকার ছায়ারচর নামক স্থানে ডলফিনটিকে মাথা বরাবর আড়াআড়িভাবে এবং ঘাড় থেকে লেজ পর্যন্ত কেটে হত্যা করা হয়। সেই সাথে ডলফিনটির চর্বিও কেটে নেওয়া হয়।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) হালদা নদীর ডলফিনের এই প্রজাতি ডলফিনকে অতি বিপন্ন (লাল তালিকাভুক্ত) হিসেবে চিহ্নিত করেছে। মৃত এ ডলফিনটির দৈর্ঘ্য ৫ ফুট ২ ইঞ্চি এবং ওজন ৫২ কেজি।

গত আড়াই বছরে ২৪টি ডলফিনের মৃত্যু হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ধারণা, জেলেদের অবৈধ জালে আটকা পরলে ডলফিনটিকে ডাঙ্গায় তুলে হত্যা করে কেটে চর্বি নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২১ মার্চ ২৩ তম ডলফিনের মৃতদেহ পাওয়া যায় রাউজান অংশের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আজিমের ঘাট এলাকায়।

৮ মে সর্বশেষ ডলফিনটি হত্যার পর এবারই প্রথম হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধে কার্যকর নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হল হাইকোর্টে।

সিএম/এফএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!