করোনা শনাক্ত হওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীকে পুড়িয়ে মারার হুমকি!

পটিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্বাস্থ্যকর্মী ও তার স্ত্রীর পরিবারের লোকজনদের পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছে প্রতিবেশীরা। আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত। গত শনিবার রাতের পর থেকে তারা উপর্যুপরি হুমকি দিচ্ছে জানিয়ে প্রশাসনকে সোমবার (১১ মে) মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন ওই স্বাস্থ্যকর্মী।

পৌরসভার দক্ষিণ গৌবিন্দারখীল ছিপাতলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাবেদ বলেন, হুমকির বিষয়টি আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী ফোনে জানিয়েছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পটিয়া থানার ওসিকে জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্যকর্মীর পিতা আবুল হোসাইন বলেন, করোনা শনাক্ত হওয়ার খবরের পর গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন লকডাউন করার পর থেকে নিয়ম মেনে আইসোলেশনে আছে আমার ছেলে। রাত দেড়টার দিকে পাশের বাড়ির মাবিয়া খাতুন, আবদুর রহমান ও বাচাসহ কয়েকজন প্রতিবেশী বাড়ির সামনে এসে চিৎকার ও গালাগাল করতে থাকে। তারা এলাকায় করোনা রোগী থাকতে পারবেনা থাকলে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমা বলেন, ‘আমরা গতকাল এবং আজও আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়িতে খাবার দিয়ে এসেছি প্রতিবেশীদেরও সহমর্মিতা দেখাতে অনুরোধ করেছি।’

ওই স্বাস্থ্যকর্মীর স্ত্রী তাহমিদা সুলতানা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমার স্বামী আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই আমি বাবার বাড়িতে আছি। স্বামী আইসোলেশনে আছেন। আমি সেখানে যাইনি। এর মাঝে গত শনিবার আমার বাবার বাড়িতেও লোকজন এসে বাড়ির পেছনে তালা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। যাতে আমরা ঘর হতে বের হতে না পারি। এ সময় তারা আমি ও আমার পরিবারকেও নানা অপবাদ দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশিরা আমার বাপের বাড়িতে এসেও শাসিয়ে যাচ্ছে। আমার স্বামী তো একজন স্বাস্থ্যকর্মী। মানুষের সেবা দিতে গিয়ে যদি আক্রান্ত হয়েছে। ‘

উল্লেখ্য, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রথম কর্মীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মে। আক্রান্ত কোন রোগীর কাছ থেকে তিনিও সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি গত ৮ মে শুক্রবার থেকেই ১৪ দিনের জন্য হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। এখনও কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক তার খোঁজ খবর নিচ্ছে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!