সেনা কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় সেই লিয়াকতসহ ২০ পুলিশ ‘ক্লোজড’

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ নিহত হওয়ার ঘটনায় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীসহ ২০ জনকে ক্লোজড করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীই প্রথম গুলি করেন সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তাকে। লিয়াকত আলী এর আগে সিএমপিতে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়।

শনিবার (১ আগস্ট) রাতে ফাঁড়ির পুরো টিমকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার)।

রোববার (২ আগস্ট) বিকেলে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়িতে পুরো নতুন টিম দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হতে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি (অপারেশন্স এন্ড ক্রাইম) জাকির হোসেন।

অন্যদিকে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা রাশেদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার সন্ধ্যায় আত্মীয়স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীন আবদুর রহমান।

শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজারের টেকনা‌ফ উপ‌জেলার বাহারছড়ায় মে‌রিন ড্রাইভ সড়কে পু‌লিশের গু‌লিতে নিহত হওয়া সেনাবা‌হিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান যশোরের ১৩ বীর হেমায়েত সড়কের সেনানিবাস এলাকার মৃত এরশাদ খানের ছেলে।

পু‌লিশ দাবি করেছে, ওই সেনা কর্মকর্তা তার ব্য‌ক্তিগত গা‌ড়িতে করে অপর একজন স‌ঙ্গীসহ টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আস‌ছিলেন। ‌মে‌রিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া চেকপোস্টে পু‌লিশ গা‌ড়ি‌টি থা‌মিয়ে তল্লাশি করতে চাইলে সেনা কর্মকর্তা বাধা দেন। এই নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে সেনা কর্মকর্তা তার কাছে থাকা ‘পিস্তল’ বের করলে পুলিশ গু‌লি চালায়। এতে সেনা কর্মকর্তা রাশেদ ‘গুরুতর আহত’ হন।

আহত অবস্থায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে ‌গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। শ‌নিবার (১ আগস্ট) সকালেই নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

কক্সবাজার পু‌লিশ সুপার এ‌বিএম মাসুদ হোসেন দাবি করেছেন, সামলাপু‌রের লোকজন ওই গা‌ড়ির আরো‌হীদের ‘ডাকাত সন্দেহ করে’ পু‌লিশকে খবর দেয়। এই সময়ে পু‌লিশ চেকপোস্টে গা‌ড়ি‌টি থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গা‌ড়ির আরো‌হী একজন তার পিস্তল বের করে পু‌লিশকে গু‌লি করার চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে পু‌লিশও গু‌লি চালায়। এতে ওই ব্যক্তি মারা যায়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, এই ঘটনায় দু‌টি মামলা হয়েছে। ২ জনকে আটক করা হয়েছে। পু‌লিশ পিস্তল‌টি জব্দ করেছে। এছাড়া গা‌ড়িতে তল্লাশি করে ৫০টি ইয়াবা, কিছু গাজা এবং দুটি বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত মেজর (অব.) রা‌শেদ এক‌টি তথ্য চিত্রধারণের কাজে এক নারী ও অপর ৩ জন পুরুষ সঙ্গীসহ গত এক মাস ধরে হিমছ‌ড়ির এক‌টি রেস্টহাউজে অবস্থান কর‌ছিলেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!