পুলিশের গুলিতে অবসরে যাওয়া সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ায় মেরিন ড্রাইভ সড়কে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ) লং কোর্স ৫১তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা ছিলেন।
এ ঘটনার তদন্তে শনিবার (১ আগস্ট) তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জননিরাপত্তা বিভাগের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, তিন সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলী। অন্য দুই সদস্য হলেন কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজারের এরিয়া কমান্ডারের একজন প্রতিনিধি। আগামী সাত কর্মদিবসের ভেতরে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, তদন্ত কমিটি ঘটনার বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার কারণ ও উৎস অনুসন্ধান করবেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মতামত দেবেন।
শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ায় মেরিন ড্রাইভ সড়কে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান যশোরের ১৩ বীর হেমায়েত সড়কের সেনানিবাস এলাকার মৃত এরশাদ খানের ছেলে।
পুলিশ দাবি করেছে, ওই সেনা কর্মকর্তা তার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে অপর একজন সঙ্গীসহ টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আসছিলেন। মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করতে চাইলে সেনা কর্মকর্তা বাধা দেন। এই নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে সেনা কর্মকর্তা তার কাছে থাকা ‘পিস্তল’ বের করলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে সেনা কর্মকর্তা রাশেদ ‘গুরুতর আহত’ হন।
আহত অবস্থায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার (১ আগস্ট) সকালেই নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন দাবি করেছেন, সামলাপুরের লোকজন ওই গাড়ির আরোহীদের ‘ডাকাত সন্দেহ করে’ পুলিশকে খবর দেয়। এই সময়ে পুলিশ চেকপোস্টে গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গাড়ির আরোহী একজন তার পিস্তল বের করে পুলিশকে গুলি করার চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালায়। এতে ওই ব্যক্তি মারা যায়।
পুলিশ সুপার আরো জানান, এই ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। ২ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ পিস্তলটি জব্দ করেছে। এছাড়া গাড়িতে তল্লাশি করে ৫০টি ইয়াবা, কিছু গাজা এবং দুটি বিদেশী মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত মেজর (অব.) রাশেদ একটি তথ্য চিত্রধারণের কাজে এক নারী ও অপর ৩ জন পুরুষ সঙ্গীসহ গত এক মাস ধরে হিমছড়ির একটি রেস্টহাউজে অবস্থান করছিলেন।
সিপি