সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে মৃত্যু ছাড়াল ৩২, সময়ের সাথে বাড়ছে লাশ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ বিএম ডিপোর কর্মকর্তা যশোরের শাহাদত ইব্রাহিমের মৃত্যুর মাধ্যমে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ জনে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারনা করছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

নিহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, বাঁশখালীর মমিনুল হক (২৪), মো. মহিউদ্দীন (২৪), রবিউল আলম (১৯), ভোলা জেলার হাবিবুর রহমান (২৬) ও যশোরের শাহাদাত ইব্রাহিম। এ ঘটনায় অন্তত দুই শাতধিক আহত হয়েছেন। আগুনে দগ্ধদের চমেকসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সীতাকুণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ৫২ জন এবং অর্থোপেডিক বিভাগে ১০ ভর্তি রয়েছে। এছাড়াও নগরীর সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি আছে আরো কয়েকশত অগ্নদ্বগ্ধরোগী।

চমেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ জানান, ‘৫২ জন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। তাদের বেশিরভাগেরই শ্বাসনালী পোড়া। ভর্তি রোগীদের অনেকের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানান তিনি।’

এদিকে ডিপোতে আগুন নিয়ন্ত্রনে এখনো কাজ করে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, ‘রোববার (৫ জুন) সকালেও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কিছুক্ষণ পর পর বিস্ফোরণের কারণে আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে।ডিপোতে বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পার অক্সাইড’ দাহ্য রাসায়নিক রয়েছে।’

শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ও ২ শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ আশপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছেন।

সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ২৪ একর জায়গায় অবস্থিত। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে। এখান থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য কনটেইনারগুলো প্রস্তুত করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়। ৩৮ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ঘটনার সময় সেখানে ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সময় অন্তত দুইশ শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন বলেও জানা গেছে। তবে সেখানে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ তখন ছিলেন তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি।

বিএস/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!