সন্দেহ থেকে অশান্তি, আত্মহত্যায় সমাপ্তি

চট্টগ্রামে স্ত্রী’র ওড়নায় ফাঁস লাগিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা

ভালোবেসে বিয়ে। তারপর বছর দুয়েকের সংসার। এরপর সন্দেহ থেকে শুরু হয় অশান্তি। শেষে আত্মহত্যা। করুণ এ হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের লালখান বাজার এলাকায়।

রঙমিস্ত্রি মো: বাবু (২২) ভালোবেসে বিয়ে করে ঘরে তুলে আনেন মুক্তাকে। কিন্তু বউয়ের ফোনে কথা বলা নিয়ে সন্দেহ করত। কারও সাথে ফোনে কথা বলা দেখলেই বকাঝকা করত।

তারপরও বউয়ের প্রতি ভালোবাসার কমতি ছিল না। বেতন পেলেই বউকে কিছু না কিছু কিনে দিত। কিছুদিন আগেও নতুন একটি সালোয়ার কামিজ এনে দিয়েছিল বউকে। শুক্রবার দুপুর ৩টার দিকে বউকে ফোনে কথা বলতে দেখে রাগারাগি শুরু করে। বউও পাল্টা জবাব দেয়।

রাগে অভিমানে দরজা বন্ধ করে বউয়ের নতুন সালোয়ার কামিজের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় বাবু। পরে পরিবারের লোক জানতে পেরে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাবু লালখান বাজার ওয়ার্ডের মতিঝর্ণা ৪নং গলির মো. খলিলের মেজ ছেলে।

চট্টগ্রাম মেডিকেলে লাশ ঘরের সামনে থেকে মুঠোফোনে সন্ধ্যা সাতটায় বাবুর বাবা মো. খলিল উপরের কথাগুলো বলছিলেন। কান্না মেশানো গলায় বাবুর বাবা খলিল জানান, তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী। প্রায় ২৫ বছর ধরে চট্টগ্রাম শহরে থাকেন। তার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে।

বাবু রঙমিস্ত্রির কাজ করত। বছর দুয়েক আগে তার ছেলে বাবু বিয়ে করে বউ বাড়ি নিয়ে আসে। মেয়েটির নাম মুক্তা। পরিবার থেকে তাদের প্রেমের বিয়ে মেনেও নেয়া হয়। কিন্তু তার ছেলে ও তার পুত্রবধূর মধ্যে মিল ছিল না। প্রায়ই সময়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত। বউকে সন্দেহ করত বাবু।

শুক্রবার দুপুর থেকেই ফোনে কথা বলা নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। বাসায় সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত ছিল। বউয়ের সাথে ঝগড়া করে তার ছেলে বাবু ঘরের দরজা বন্ধ করে কথন গলায় ফাঁস লাগিয়েছে তা আমরা কেউই টের পাইনি। তারপর টের পেলে দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে দেখি বউয়ের ওড়নায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছে বাবু। পরে আমরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে আসলে ডাক্তার জানায় অনেক আগেই মারা গেছে বাবু।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত খুলশী থানার এসআই নুরুল ইসলাম দীপু জানান, আমরা খবর পেয়েই মেডিকেলে এসেছি। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসারের কাছ থেকে জানতে পারি, বিকেল পাঁচটার দিকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় বাবুকে আনা হয়েছে।

লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশঘরে রাখা আছে। থানায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি বলে জানান এসআই দীপু।

আইএমই/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!