শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রায় নন্দনকানন ইসকনের বর্ণিল উদ্যোগ

ভগবান শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে নন্দনকানন ইসকন মন্দিরে চট্টগ্রাম ইসকনের ২৫তম বিভাগীয় রথযাত্রায় এবার বর্ণিল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

ইসকন

সোমবার (২৭ জুন) নন্দনকানন ইসকন মন্দিরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইসকনের ২৫ তম (রজতজয়ন্তী) শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রথযাত্রা উৎসবে সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবিও জানানো হয়।

সভায় আগামী শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির এবং রথযাত্রা উৎসবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানানো হয়। রথযাত্রা উপলক্ষে এবার সাতদিনব্যাপী জেএম সেন হলে ভাগবদ সপ্তাহ পালন হবে।

১ জুলাই রথযাত্রায় বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞানুষ্ঠান, শ্রীজগন্নাথদেবের মধ্যাহ্নকালীন ভোগারতি, ধর্ম মহাসম্মেলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বৈদিক নাটক অনুষ্ঠিত হবে।

মহাশোভাযাত্রা নন্দনকানের শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির সামনে থেকে শুরু হয়ে চেরাগি পাহাড়, আন্দরকিল্লা, বক্সিরহাট, লালদীঘির পাড়, কোতোয়ালীর মোড়, নিউমার্কেট, আমতলা, বোস ব্রাদার্স হয়ে নন্দনকানন শ্রীশ্রী গৌর নিতাই আশ্রম এসে শেষ হবে।

এবারের রথযাত্রায় চুয়েট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ চট্টগ্রামের স্বনামধন্য ২২টি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন। এছাড়াও প্রায় ১২০টির বেশি সংগঠন তাদের নিজস্ব ব্যানারে অংশগ্রহণ করবে।

প্রস্তুতি সভায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের সুচিন্তিত মতামত তুলে ধরেন।

নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ পণ্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহসভাপতি অকিঞ্চন গৌর দাস ব্রহ্মচারী, সাধারণ সম্পাদক তারণ নিত্যানন্দ দাস ব্রহ্মচারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকুন্দ ভক্তি দাস ব্রহ্মচারী, এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নয়ন বড়ুয়া, শেষরূপ দাস ব্রহ্মচারী, সুবলসখা দাস ব্রহ্মচারী, অপূর্ব মনোহর দাস ব্রহ্মচারী, কিশোর দাস প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ মানুষের মিলনোৎসব হলো রথযাত্রা উৎসব। সারা বিশ্বের প্রায় ১২৭টি দেশে এই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে হামলা প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, ইসকনের বিভিন্ন মঠ, মন্দির ও ভক্তদের ওপর হামলা বাংলাদেশের ধর্ম নিরপেক্ষ শান্তিপ্রিয় মানুষের হৃদয়কে বিদীর্ণ করেছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সেই দেশে এইসব ঘটনা নিশ্চয়ই স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনাকালে ভক্তদের ওপর হামলা কোনো স্বাধীন বাংলাদেশের চিত্র হতে পারে না।

বক্তারা আরও বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর বার বার পরিকল্পিত হামলা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিচ্ছে না। তাই প্রতিনিয়ত মঠ-মন্দিরে হামলা, গুম হত্যা ও ধর্ষণ বেড়েছে। এসব গুপ্ত হত্যা করে দেশ থেকে সংখ্যালঘুদের বিতাড়িত করার একটা অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সরকার যদি এসব হত্যকারীদের এবং মূল হোতাদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি না দেয় তাহলে দেশ অনেক পিছিয়ে যাবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!