রেলে লোহা চুরির ৪ ঘটনা লুকাতেই সাজানো আগুন? (ভিডিও)

তদন্তের রিপোর্ট আসেনি ৫ মাসেও

চট্টগ্রামে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পাহাড়তলীর পুরান ডিপোতে ১০ মাসে সরকারি লোহা পাচার হয়েছে মোট চারবার। লোহা পাচারের পর ঘটনার তথ্য প্রমাণ লুকাতে কিংবা আলামত নষ্ট করতে ইচ্ছাকৃত অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

লোহা পাচারের এসব ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরও তদন্তের কোন অগ্রগতি নেই। এছাড়াও আগুনের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বললেও গত ৫ মাসেও রিপোর্ট আসেনি।

রেলওয়ের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বলছে, পাচারকৃত লোহা বিষয়ক তথ্য ও আলামত নষ্ট করতে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ১০ মার্চ। দমকল বাহিনীর ৩ ইউনিট মিলে ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছিল। ওই আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছিল ওই তদন্তের কাজও চলে গেছে হিমাগারে।

জানা গেছে, গত ১০ মাসে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্বে থাকার সময় নগরীর পাহাড়তলীর রেলওয়ের পুরাতন সেলডিপো হতে ৪ দফায় বিপুল পরিমাণ লোহা পাচার হয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িত থাকা আরএনবি সদস্য ও বাহিনীর কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়। অভিযোগের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অভিযোগে হাবিলদার মুহিদুল, নোমাসহ কয়েকজনের নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরএনবি সদস্যদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না জানতে বাহিনীর চিফ কমান্ড্যান্ট জহিরুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বাহিনীর কমান্ড্যান্ট শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগগুলো রেলের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আসেনি। ডিপো ইনচার্জ হলেন ডিপোর রক্ষক।’ তবে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন তা পরিস্কার করেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সত্য বেরিয়ে পড়ার ভীতি থেকেই নানা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এতে শুধু বাহিনীর সদস্য নয়, জড়িত আছেন রেলওয়ে কর্মকর্তাও।’

এ ব্যাপারে তদন্তকারী দলের আহবায়ক আরিফুজ্জামান শিকদার বলেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলাম। তারপরই শুরু লকডাউনের বন্ধ। এ কারণেই প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি। শীঘ্রই এ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।’

উল্লেখ্য, গত ১ মার্চ বিকেলে ডিপো থেকে ৬ টন ৮শ কেজি স্ক্র্যাপ লোহা পাচারের সময় ট্রাকসহ লোহাগুলো আটক করে খুলশী থানাধীন পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই। ওই সময় ডিপোর ইনচার্জ দুইদিনের ছুটিতে ছিলেন। তার স্থলে দায়িত্ব পাওয়া গোলাম রব্বানী ও হাবিলদার নোমান ২৯ ফেব্রুয়ারি অফিস কপি দিয়ে ওই লোহাগুলো ফিরিয়ে আনেন। বিষয়টি সিআই রেজয়ানুর রহমান ও সিআই ইসরাফিল মৃধা জানার পরেও কোন ব্যবস্হা নেননি। ওই ঘটনার ১০ দিনের মাথায় ১০ মার্চ ডিপোতে রহস্যজনকভাবে আগুন লাগে দিনে দুপুরে।

জেএস/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!