যৌন নিপীড়ক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যেভাবে এগোবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত ছাত্রকে প্রথমেই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা যাবে না। তবে কর্তৃপক্ষ চাইলে তাকে শ্রেণিকক্ষে আসা থেকে বিরত রাখতে পারবে। এরপর অভিযোগ প্রমাণিত হলে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাবিধি অনুসারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি অভিযোগ যদি দণ্ডবিধি অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় তাহলে প্রতিষ্ঠান ফৌজদারি আইনের আশ্রয় নেবে, যা পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের মাধ্যমে বিচার হবে।

রোববার (৩ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৭তম বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। বৈঠকে ‘যৌন হয়রানি ও শিক্ষা কর্মপরিবেশ তৈরিতে হাইকোর্ট প্রদত্ত নীতিমালা’ উপস্থাপিত হয়। এর আগে সংসদীয় কমিটি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চায়। এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় হাইকোর্টের নীতিমালাটি বৈঠকে উপস্থাপন করে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপও তুলে ধরা হয় বৈঠকে।

হাইকোর্ট প্রদত্ত নীতিমালার ধারা ১১-(শাস্তি)-এ বলা হয়েছে, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে (ছাত্র ব্যতিরেকে) সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারেন এবং ছাত্রদের ক্ষেত্রে অভিযোগ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তাদের শ্রেণিকক্ষে আসা থেকে বিরত রাখতে পারেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে ও সব সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রের শৃঙ্খলাবিধি অনুসারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যদি উক্ত অভিযোগ দণ্ডবিধির যেকোনো ধারা অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ফৌজদারি আইনের আশ্রয় নিতে হবে। যা পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে বিচার হবে।’

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ওমেন লয়ারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনডাব্লিউএলএ) হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। পিটিশন নং ৫৯১৬/২০০৮। ওই রিটের রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, সব সরকারি-বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট অভিযোগ কমিটি গঠন করার নির্দেশনা রয়েছে। তার মধ্যে দুইজন সদস্য হবেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বাইরের, যারা জেন্ডার ও যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে কাজ করেন।

এই নির্দেশনা অনুসারে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি ইউনিটে কমপ্লেইন্ট কমিটি গঠন করা হয়।

মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ ও বেগম রুমানা আলী অংশ নেন।

বিশেষ আমন্ত্রণে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আ স ম ফিরোজ, মোছা. মাহাবুব আরা গিনি, মেহের আফরোজ, মো. আব্দুস শহীদ, আ ফ ম রুহুল হক, মো হাবিবে মিল্লাত, উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, মোছা. শামীমা আক্তার খানম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও আরমা দত্ত।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক ও দুই বিভাগের অধীনস্থ সংস্থাগুলোর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!