যোগ্যতাহীন সাধারণ কর্মী একলাফেই ‘স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়কের’ গুরুত্বপূর্ণ পদে

শেষ সময়ে সাবেক মেয়র নাছিরের আরেক কাণ্ড

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক পদে কোন যোগ্যতা ছাড়াই একজন ‘পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ কর্মী’কে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়াকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

মেয়র আজম নাছির উদ্দিনের মেয়াদের শেষ দিনে গত ৫ আগস্ট চসিকের ‘পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ কর্মী’ আবুল মুনছুরকে তার নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়কের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করেন চসিকের সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী।

সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে, চাকরি বিধি অনুযায়ী পদোন্নতির মাধ্যমে স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে তিনটি যোগ্যতার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। তার প্রথমটি হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা। অন্য দুটি হচ্ছে কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি ও ফুড এন্ড স্যানিটেশনের ওপর ৩ বছর মেয়াদি একটি কোর্স থাকতে হবে। তবে বিতর্ক এড়াতে সরকারি পদোন্নতি কিংবা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব না দিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে মুনছুরকে এই পদে বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘যেখানে স্বাস্থ্য পরিদর্শক আছেন সেখানে নন টেকনিক্যাল পদের একজনকে কেন অতিরিক্ত দায়িত্ব দিতে হলো? সেটা তো স্বাস্থ্য পরিদর্শককেই দেওয়া যেত। কিন্তু তা না করে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে এটি করা হয়েছে। যাতে কদিন পরে এই অতিরিক্ত দায়িত্বকে স্থায়ী করা হবে।’

এদিকে যে নিয়োগ নিয়ে এত ক্ষোভ-বিক্ষোভ সেই নিয়োগের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে কিছুই জানি না আমি। আমার সাথে এই বিষয়ে কেউ আলাপ করেনি। তবে পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণকর্মী পোস্টটা তো নন-টেকনিক্যাল একটা পোষ্ট। অন্যদিকে স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়কের পদটি টেকনিক্যাল। এখন নন টেকনিক্যাল লোক দিয়ে কিভাবে টেকনিক্যাল একটা দায়িত্ব চালানো যায় সেটা তো আর বলতে পারি না।’

চসিকের সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দেখুন এখানে তো কোন পদোন্নতি কিংবা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আপনি যে শর্তগুলোর কথা বলেছেন সেগুলো ওই দুটি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এখানে নিজের মূল দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত হিসেবে স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুনছুরকে। কোন নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি এখানে।’

জানা গেছে, ৩১ বছর আগে চসিকের পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ কর্মী হিসেবে যোগ দেন আবুল মুনছুর। পরে লাইসেন্স পরিদর্শক ও সাইনবোর্ড পরিদর্শক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। মেয়র মনজুর আলমের সময়ে সাইনবোর্ড পরিদর্শকের দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।

তবে পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণকর্মী থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন জানিয়ে আবুল মুনছুর বলেন, ‘আমাকে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখানে কোন দুর্নীতি হয়নি।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!