মামলার আগেই নিরীহ লোককে জেলে পাঠালো পটিয়ার পুলিশ

মহাসড়ক অবরোধ, ধর্ষণচেষ্টার মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা

মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো, হয়রানি, মামলার হওয়ার আগেই নিরীহ লোককে জেলে পাঠানোসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে পটিয়া থানার এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে। তাকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।

অভিযুক্ত ওই এসআই পটিয়া থানার জাকির হোসেন।

শনিবার (১৬ মার্চ) বিকালে পটিয়া চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের জলুয়ার দীঘির পাড় এলাকায় বিক্ষুব্ধ লোকজন সড়ক অবরোধ করে। অবরোধের ১৫ মিনিটের মাথায় কচুয়াই ইউপি চেয়ারম্যান ইনজামামুল হক জসিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে নেয়। এ সময় মহাসড়কের দুই দিকের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে এ ঘটনায় আজিমপুর গ্রামের লোকজন একটি কমিউনিটি সেন্টারে ওই এলাকার ওবায়দুল হক ওরফে এ কে খান নামের এক ব্যক্তিকে মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণের প্রতিবাদে ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এলাকার সেকান্দর আলী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নিলু আক্তার নামের একজন খারাপ মহিলা আজিমপুর গ্রামীণ ব্যাংকের পেছনে জনৈক ছলমা বেগম নামের মহিলা থেকে ঘর ভাড়া নেয়। সেখানে প্রায় সময় অচেনা লোকজন আসা যাওয়া করে থাকে। এছাড়া তাদের নিয়ে অনৈতিক কাজ লিপ্ত হয়। এর প্রতিবাদ করায় এ কে খানের সঙ্গে নিলু আক্তারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ কে খানকে ফাঁসানোর জন্য নিলু আক্তার কয়েকবার হুমকি দেয়। এর জের ধরে গত ১৪ মার্চ সকাল ১১ টার দিকে একে খান ও তার স্ত্রী শাহানা আক্তার বুলুর সঙ্গে নিলুর কথা কাটাকাটি হয়। এতে নিলু আক্তার তার ৫ বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে মর্মে পটিয়া থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের তদন্ত না করেই সেদিন বিকাল ৪টায় পটিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জাকির হোসেন বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসেন এ কে খানকে। পরদিন ১৫ মার্চ বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম জেল হাজতে প্রেরণ করে। ১৫ মার্চ রাত ১০টায় থানায় একটি মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টা মামলা রেকর্ড করা হয়।

এ ব্যাপারে কচুয়াই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, নিলু আক্তার রোহিঙ্গা ছিল। উত্তর শ্রীমাই গ্রামে জায়গা ক্রয় করে বসতঘর নির্মাণ করেন। সেখানে অনৈতিক কাজের কারণে এলাকার লোকজনের চাপে পড়ে জায়গা বিক্রয় করে দিয়ে ভাড়া বাসায় অবস্থান নেন। এসআই জাকির হোসেনের চরিত্র ভাল নয়। তিনি প্রায় সময় নিলু আক্তারের বাসায় আসা-যাওয়া করত। এ সুযোগে এ কে খানকে ফাঁসানোর জন্য ওই এসআই ভূমিকা রাখে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পটিয়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা সাজেদা বেগম বলেন, এ কে খানকে গ্রেপ্তারের খবর শুনে ইউপি চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসিম ও এলাকার লোকজন নিয়ে আমরা থানায় যাই। এলাকার লোকজন দেখে নিলু আক্তার মিথ্যা মামলা রেকর্ড করতে না চাইলেও এসআই. জাকির হোসেনের চাপে পড়ে মিথ্যা মামলাটি রেকর্ড করে।

কচুয়াই ইউপি চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসিম বলেন, এ কে খান নিলু আক্তারের অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ায় রোষানলের শিকার হন। এস আই ও ওসিকে মিথ্যা মামলা রেকর্ড না করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা অনুরোধ রক্ষা করেনি। এছাড়া পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যে ডাক্তার রিপোর্ট দিয়েছে সে রিপোর্ট দেওয়ার দায়িত্ব তার নেই।

সংবাদ সম্মেলনে শতশত এলাকাবাসী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাহেদুল হক, লাল মিয়া, মোহাম্মদ গনি, মোজাফফর আহমদ, মোহাম্মদ ইসলাম, লেদা মিয়া, রেজাউল করিম, মো. ফারুক, শাহনেওয়াজ।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!