‘ভয়ভীতি-বাধা’ মানছে না ঘরমুখো মানুষ, তিনগুণ বেশি ভাড়ায়ও জনস্রোত

রোধ করা যাচ্ছে না মানুষের স্রোত। যে যেভাবে পারছেন সেভাবেই ছুটে চলেছেন বাড়ির পানে। সরকারি বাধা-নিষেধ উপেক্ষা করেই ফজর আযানের পর থেকেই নারী পুরুষ সমান তালে ছুটে চলেছে নাড়ির টানে। সুযোগ বুঝে বাস, কার, মাইক্রোবাস, শহরের চলাচল করে এমন সিটি বাস দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া নিয়ে ছুটে চলেছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে।

ঈদুল ফিতর বাংলাদেশের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। তাই ঈদ এলেই জীবন বাজি রেখে হলেও মানুষ ছুটে যান প্রিয়জনের টানে। সারাবছর অপেক্ষা করেন কখন ঈদ আসবে, কখন পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দ উৎসবে সময় কাটাবে। কিন্তু গতবছর থেকে মহামারী করোনার ধাক্কায় সব এলোমেলো। এক অজানা ভাইরাসের ভয়ে নিষ্প্রাণ সবকিছু। কিন্তু ঈদ বলে কথা, তাই সব বাধা, ভয়-ভীতি উপেক্ষা করেই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার এ যাত্রা।

বুধবার (১২ মে) ভোর ৫টায় চট্টগ্রামের অলংকার মোড়, একে খান, ও কর্নেলহাট এলাকায় গিয়ে ঘরমুখী মানুষের ঢল দেখা যায়। শুধু প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রোবাস নয়, সংবাদপত্র লেখা সাইনবোর্ড ঝুলানো গাড়িতেও জনপ্রতি ১৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকায় যাত্রী নেওয়া হচ্ছে ঢাকায়। অলংকার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের সামনেই বাস, মাইক্রো, কারে প্রকাশ্যেই উঠানো হচ্ছে লোকজন।

জানা যায়, লকডাউন চলাকালে ঈদে দূরপাল্লার বাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, বুধবার ভোর থেকে সরকারি এ নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যে চলাচল শুরু করে বাস। ভোর থেকে ৮টা পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে বাস দাঁড়িয়ে দূরপাল্লার যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি মাইক্রোবাস ও কার যাত্রী বোঝাই করে চলাচল করতে দেখা গেছে।

ঘরমুখো মানুষ দ্বিগুণ ভাড়ায় বাসে এবং তিন-চার গুণ বেশি ভাড়ায় কার মাইক্রোবাসে করে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এদিকে অলংকার মোড় থেকে সিটি গেইট গাড়িপ্রতি চাঁদা আদায়ে ব্যস্ত ছিলেন ট্রাফিক কনস্টেবল ও তাদের দালাল বাহিনী। অলংকার ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়ির সামনে টাকা নিতে দেখা গেছে, ফাঁড়ির কনস্টেবল দেলোয়ারকে (৪০)। দায়িত্বরত সার্জেন্ট কোথায় এমন প্রশ্নে দেলোয়ার জানান, স্যার একটু সামনে গেছে। বাসে যাত্রী পরিবহন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই তাদের ফাঁসি দিলেও মানাতে পারবেন না, এটা যে নাড়ির টান।

এদিকে জরুরি সংবাদপত্র লাগিয়ে একে খান মোড়ে জনপ্রতি ১৫শ টাকা করে ঢাকার যাত্রী নিচ্ছে একটি হাইস (ঢাকামেট্রো চ ১৫-১৪৩৪)। নাম জিজ্ঞেস করতেই বলেন-০ পত্রিকা এনেছি ঢাকা থেকে। অথচ ভেতরে গাদাগাদি করে মহিলা ৫ জন বসানো হয়েছে। এভাবে যাত্রী বহন কি ঠিক, জানতে চাইলে ড্রাইভারের সহজ উত্তর- কিছু করার নেই।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!