‘বুক চিন চিন’ পাবেল আসছেন নতুন চমক নিয়ে

‘বুক চিন চিন করছে হায়’ গেয়ে দেশব্যাপী সাড়াজাগানো চট্টগ্রামের তরুণ কন্ঠশিল্পী জাহেদ পারভেজ পাবেল এবারে নতুন বছরে আসছেন নতুন চমক নিয়ে। নিউ ইয়ার উপলক্ষে এবার-ওপার বাংলার নামি সংগীত পরিচালক লিংকন রায় চৌধুরীর সুরে নিউয়ার স্পেশাল একটি মিউজিক ভিডিও নিয়ে আসছেন তিনি। এর মধ্যে গানটির রেকর্ড শেষ হলেও এখনও অসম্পূর্ণ আছে মিউজিক ভিডিওটির শুটিং।

চট্টগ্রামের গার্ডেন রেস্টুরেন্ট বাগানবিলাসে ঘুরতে এসে আলাপচারিতার এক ফাঁকে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে এসব কথা জানান পাবেল।

চট্টগ্রামের গার্ডেন রেস্টুরেন্ট বাগানবিলাসে ঘুরতে এসে পাবেল জানালেন নিজের মুগ্ধতার কথাও।
চট্টগ্রামের গার্ডেন রেস্টুরেন্ট বাগানবিলাসে ঘুরতে এসে পাবেল জানালেন নিজের মুগ্ধতার কথাও।

সাম্প্রতিক সময়ে কী নিয়ে কাজ করছেন— চট্টগ্রাম প্রতিদিনের এমন প্রশ্নের জবাবে জাহেদ পারভেজ পাবেল বলেন, ‘কলকাতার সংগীত পরিচালক লিংকন রায় চৌধুরী দাদার সুরে তারই লেখা একটা গান শেষ করলাম। এটা নিউ ইয়ার স্পেশাল। নতুন বছরের শুরুর দিকে গানটি রিলিজ হবে।’

চট্টগ্রামের সন্তান পাবেল গান গাইছেন একদশক ধরে। প্রকাশিত হয়েছে গোটা পঁচিশেক গান। তবে এ বছরের শুরুতে ‘শিল্পী’ নাটকের বাংলা সিনেমার পুরানো একটি গান নতুন সুরে গেয়ে দেশব্যাপী সাড়া ফেলে দেন তিনি।

‘বাস্তব’ সিনেমার এন্ড্রু কিশোর ও ডলি সায়ন্তনীর যৌথ কন্ঠে গাওয়া ‘বুক চিন চিন’ গানটির পুরুষ ও নারী দুই অংশেই কণ্ঠ দেন পাবেল! নাটকটিতে জুটি বেঁধেছেন সময়ের আলোচিত আফরান নিশো ও মেহজাবীন।

গানটি প্রকাশের পর চট্টগ্রামের এই গানপাগল তরুণকে দেশজুড়ে আলোচনায় চলে আসেন। ইউটিউবে গানটির ভিউ এখন ৩ কোটি ৮০ লাখ। গানটি নতুন করে সংগীত পরিচালনা করেছেন সময়ের আলোচিত সংগীত পরিচালক আভরাল সাহির।

এর ছয় মাসের মাথায় আরেকটি নতুন গান নিয়ে হাজির হন পাবেল। এবার আর কভার নয়, মৌলিক গান। ঈদুল আজহার পরদিন ‘সোনা বন্ধুরে’ শিরোনামের গানটি ধ্রুব মিউজিক স্টেশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে।

রিদমিক ধাঁচের এই গানের গানটির কথা লিখেছেন যৌথভাবে নাসিফ ও জুয়েল মোর্শেদ। আদিব ও জুয়েল মোর্শেদের যৌথ সুরে গানটির সঙ্গীতায়োজন করেছেন আদিব। র‍্যাপ করেছেন টিকটক তারকা র‍্যাপস্টা দাদু। মডেল হিসেবে পারফর্ম করেছেন হামজা ও শাকিলা পারভিন। কেরানীগঞ্জের লোকেশনে গানটির ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। এটি পরিচালনা করেছেন রাজ বিশ্বাস।

সেই গানটিও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সে সম্পর্কে পাবেল বলেন, ‘গানটিতে দারুণ সাড়া পেয়েছি। ইউটিউবে ২৬ লাখ ভিউ ছাড়িয়ে গেছে ইতিমধ্যে। গানটি নিয়ে প্রচুর টিকটক হচ্ছে। মুক্তির আগে যেমনটা ভেবেছিলাম, তার চেয়ে বেশি সাড়া মিলেছে। ইন্টারেস্টিং সব ভিডিও ক্লিপ পাচ্ছি। দর্শক-শ্রোতার কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়ায় নতুন কাজের অনুপ্রেরণা আসে।’

সংগীত চর্চার শুরু বিষয়ে পাবেল জানান, দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন হাবিব ওয়াহিদের গান শুনে গানের প্রতি ভালো লাগা। ক্লাস শেষে বন্ধুবান্ধবরা যখন আড্ডা ও খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকত, পাবেল করতেন গানের চর্চা। ১০ বছর আগে পেশাদার শিল্পী হিসেবে গাইতে ঢাকায় যান তিনি। এখনও ঢাকা-চট্টগ্রাম আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন। এরই মধ্যে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে এখন পুরোপুরি গান নিয়ে ব্যস্ত। তাঁকে উৎসাহ দিয়েছেন তাঁর মা ও মেজ ভাই।

২০১১ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত প্রায় দশটি মিক্সড অ্যালবামে কাজ করেছেন তিনি। তার প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশ পায় ২০১৫ তে। ৪টি মিউজিক ভিডিও করেছেন।

তার প্রথম মিউজিক ভিডিও প্রকাশ পায় ২০১৪ তে ‘শুধু তুমি’ শিরোনামের গানটি বেশ সাড়া ফেলে গানপাগল মানুষের কাছে এবং আরেকটি ভিডিও ছিল পাঞ্জাবিওয়ালা খ্যাত শিরিন জাওয়াদ এর সাথে ‘পিরীতির নেশা’ শিরোনামে। যেটি ছিল শিরিনের গাওয়া প্রথম কোনো দ্বৈত গান এবং এটি মুক্তি পায় ২০১৭ তে।

তবে সারাদেশ পাবেলকে নতুন করে চিনে শিল্পী নাটকের ওই গান দিয়েই। অবশ্য এর আগেও একাধিক নাটকের গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন তিনি। এসব নাটকের মধ্যে ‘আনোয়ার দ্য প্রোডাকশন বয়’, ‘মি. পরিবর্তনশীল’, ‘ইনসিকিউরিটি’, ‘সাইড ইফেক্ট’, ‘চুমকি চলেছে’ উল্লেখযোগ্য। নাটকগুলোর পরিচালক মহিদুল মহিম। আর গানগুলোর সুর ও সংগীত পরিচালক আভরাল সাহির।

স্বাভাবিকভাবেই দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে ভিনদেশের নামি আর্টিস্টদের সাথে করা নতুন গান নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখছেন পাবেল। তবে সেই স্বপ্নের নাম এখনো প্রকাশ করতে চান না তিনি। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বললেন, ‘মাত্র নতুন মিউজিক ভিডিওর জন্য কাজ শেষ করলাম। শুটিং কিছুটা বাকি আছে। এক্ষুনি গানটির ব্যাপারে বেশি কথা বলতে চাই না। নামও প্রকাশ করছিনা। তবে এটুকু বলতে পারি গানটায় অনেক বেশি নতুনত্ব থাকবে। যারা আমার গান পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা নতুন বছরের বেশ ভাল একটা উপহার হবে।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!