বিচার চাইতে যাওয়া গৃহবধূকে ‘ইয়াবা খাওয়ার’ প্রস্তাব দিলেন মেম্বার

প্রায় ১ বছর আগে টাঙ্গাইলের শিউলির (ছদ্মনাম) সাথে মুঠোফোনে পরিচয় চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার ইমরানের সঙ্গে। পরিচয় থেকে হয় প্রেমের সর্ম্পক। প্রেমের টানে টাঙ্গাইল থেকে থেকে পালিয়ে আসা ওই মেয়েটি তাকে বিয়েও করেন। বিয়ের পর থেকে স্বামীর নির্যাতনের বিচার ও বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চান স্থানীয় ইউপি মেম্বারের কাছে। কিন্তু ওই মেম্বার সহযোগিতার পরিবর্তে ইয়াবা খেলে রোগ ভাল হয়ে যাবে প্ররোচনায় দেয় ওই গৃহবধূকে। এমনকি তার সঙ্গে একাকী সময় কাটালে বাড়ি যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানান মেম্বার। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এ রকম কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হলে থানায় শরণাপন্ন হন ভুক্তভোগী গৃহবধু।

বুধবার (২১ অক্টোর) রাতে এ ঘটনায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানায় একটি জিডি করা হয়। জিডিতে ঘটনায় নেপথ্যে থাকা ইউপি মেম্বার ও তার স্বামীর বিচার দাবি করেন।

অভিযুক্তরা হলেন- চট্টগ্রামের লোহাগাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য বিদায়ী মেম্বার আবুল কাশেম ও একই উপজেলার দরবেশহাট এলাকার মো. ইসহাকের পুত্র মোহাম্মদ ইমরান (২৬)।

জিডি সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গৃহবধুর মুঠোফোনে কল করে বলে ‘‘কিরে করোনা, কেমন আছিস? কিছু শোনছোস? ওওও তোরে ভাইরাল করে দিছি। তুই বিয়া করছোস আমাকে আর সংসার করিস কাশেম মেম্বারের সাথে। তাছাড়া আমার মা-বাবাকে নিয়ে খুবই বাজেভাবে গালাগাল করা রেকর্ড আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।’’

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধু বলেন, ইমরান একজন প্রফেশনাল জুয়াড়ি। আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাড়ি থেকে লোহাগাড়া নিয়ে আসে। আসার পর বেশ কয়েকমাস আমাকে বিয়ে না করেও ভাড়া বাসায় তুলে দুইবার গর্ভপাত করিয়েছে। পরে স্থানীয়দের কাছে বিষয়টা জানাজানি হলে পরে আমাকে বিয়ে করে। বিয়ে পর থেকে আমার বাড়ি থেকে যৌতুকের জন্য টাকার চাপ দিত। বেশ কয়েকবার টাকাও এনে দিয়েছি। টাকা এনে দিতে না পারলে চালানো হতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।

তিনি আরও বলেন, ইমরান প্রতিমুহূর্তে হুমকি দিচ্ছে এলাকা ছেড়ে যেতে। আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মুঠোফোনে খারাপ আচরণ করা মেম্বার ও আমার স্বামীর বিরুদ্ধে বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি মেম্বার আবুল কাশেম বলেন, ‘ওই গৃহবধূ বাড়ি থেকে এক বছর আগে পালিয়ে আসে। ইমরান তাকে বিয়ে না করে ভাড়া বাসায় রেখে এক সঙ্গে বেশ কিছুদিন সংসার করেছে। তখন আমি নিজ উদ্যোগে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছি। ওই গৃহবধূ আমার মেয়ে মতো। আমি কেন এসব কথা বলব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগাড়া থানার ওসি জাকির হোসেন মাহামুদ বলেন, ‘ওই গৃহবধূ ও মেম্বারের সঙ্গে কথোপকথনের একটি ভিডিও ভাইরালের ইস্যুতে তার স্বামী ইমরানের হুমকির ঘটনায় একটি জিডি হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ২৯ সেপ্টেম্বর ইমরানের বিরুদ্ধে লোহাগাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূ। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

মুআ/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!